চুয়াডাঙ্গার সরিষাডাঙ্গার দরিদ্র গৃহবধূ হাতুড়ে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় কাতরাচ্ছেন

 

 

অতিরিক্ত পচন ধরায় ডান হাতটি কেটে ফেলার আশঙ্কা

মোমিনপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারণে একাধিক মৃত্য পঙ্গুত্বসহ বিভিন্ন সমস্যার রেকর্ড ক্রমেই বাড়তে থাকছে। এসব অভিযুক্ত ডাক্তারের বিরুদ্ধে তেমন কঠোরভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে এরা পার পেয়ে যাচ্ছেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের সরিষাডাঙ্গা গ্রামের গৃহবধূ ফিরোজা খাতুন তার কোমরে ও পায়ের যন্ত্রণায় আক্রান্ত হলে পার্শ্ববর্তী মুন্সিগঞ্জের পল্লী চিকিৎসক ডা. শুভ বিশ্বাসের নিকট যান। ডা. শুভ দু হাতে দুটি ইনজেকশন পুশ করে রোগীকে নিশ্চয়তা দিয়ে বলেন, ২-১ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যাবেন। সুস্থ হওয়া তো দূরের কথা ভুল চিকিৎসার কারণে ডান হাতের প্রায় সব জায়গায় মাংসের ভেতর অতিরিক্ত পচন ধরেছে। যার ফলে তার ডান হাতটি কেটে ফেলার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সার্জিক্যাল ডা. ওয়ালিউর রহমান নয়নের বক্তব্য, মেয়াদ উর্ত্তীন ইনজেকশন দেয়ার কারণে হাতে অতিরিক্ত পচন সৃষ্টি হয়েছে। অপারেশন করেও পচন রোধ করা যাচ্ছে না। হাতুড়ে ডাক্তার শুভ টাকা দিয়ে মাফ চেয়ে বাঁচার জন্য পায়তারা করছেন।

জানা গেছে, সরিষাডাঙ্গা গ্রামের উত্তরপাড়ার দরিদ্র আবুল কাশেমের স্ত্রী ফিরোজা খাতুনের (৩৫) বেশ কিছু দিন থেকে প্রায় তার কোমরে এবং পায়ে যন্ত্রণাকরতো। গত ২ এপ্রিল পার্শ্ববর্তী মুন্সিগঞ্জের পল্লী চিকিৎসক ডা. শুভ বিশ্বাসের নিকট চিকিৎসার জন্য ফিরোজা খাতুনকে নিয়ে যাওয়া হয়। রোগী ফিরোজার যন্ত্রণার বর্ণনা শোনার পর ডা. শুভ রোগীর দু হাতে দুটি ইনজেকশন পুশ করেন এবং কিছু ওষুধ দেন। ইনজেকশন পুশ করার দিনগত রাত থেকে ফিরোজার ডান হাতে অসহনীয় যন্ত্রণা নিয়ে কাতরাতে থাকেন। এরপর রোগী ফিরোজাকে ডা.শুভর নিকট আরো দুবার নিয়ে যাওয়া হয়। দিনের পর দিন পার হয়ে যায় অথচ রোগীর ডান হাতের যন্ত্রণা ক্রমেই বাড়তে থাকে। এরই একপর্যায়ে গত ১৫ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গার সার্জিক্যাল ডা. ওয়ালিউর রহমান নয়নের নিকট জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসার জন্য নেয়া হলে তিনি জানান, ভুল চিকিৎসার কারণে রোগীর ডান হাতের মাংসের ভেতর অতিরিক্ত পচন ধরেছে। ডা.নয়ন রোগীর লোকজনের কাছে বলেন, যে দুটি ইনজেকশন রোগীর দু হাতে পুশ করা হয়েছে তার মধ্যে ডান হাতের পুশ করা ইনজেকশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে রোগীর ডান হাতের মাংসের ভেতর পচন সৃষ্টি হয়েছে। ডা. নয়ন জরুরি ভিত্তিতেওই দিনই ফিরোজার ডান হাতে অপারেশন করেন। অপারেশন করেও পচন এবং পুজ পড়া বন্ধ হচ্ছেনা।

রোগী ফিরোজার স্বামী আবুল কাশেম অভিযোগ করে বলেন, ডা. শুভর ভুল চিকিৎসার কারণে আমার স্ত্রীর ডান হাতে অতিরিক্ত পচন ধরেছে। ডাক্তার জানিয়েছেন, সব চিকিৎসা করার পরও পচনরোধ করা না গেলে তার ডান হাতটি কেটে ফেলতে হবে। আবুল কাশেমের মেয়ে জোসনা খাতুন জানান, ডাক্তার শুভ এখন টাকা দিয়ে মাফ চেয়ে বাঁচার জন্য দৌঁড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। আবুল কাশেমের পরিবারের লোকজন এবং এলাকাবাসী অভিযুক্ত হাতুড়ে ডাক্তার শুভর উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।