চুয়াডাঙ্গার রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রামে ফেনসিডিলের টাকা চুরিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা

 

 

দফায় দফায় দু পক্ষের সংঘর্ষ : বাড়িঘর ভাচুর : নারী-শিশুসহ আহত ১৭

বেগমপুর প্রতিনিধি: দীর্ঘদিন থেকে মাদককারবারের কারণে বহুল আলোচিত হয়ে উঠেছেচুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রামটি। ওই গ্রামে রয়েছে প্রায় অর্ধশত মাদককারবারী এবং কয়েকজন এর হোতা। ফেনসিডিল ও মাদকদ্রব্য বিক্রির টাকা ভাগাভাগিসহ নানা কারণে প্রায়ই ঘটে সংঘর্ষের ঘটনা। এবার ফেনসিডিলের টাকা চুরি যাওয়াকে কেন্দ্র করে রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রামের চিহ্নিত মাদককারবারীচক্রের হোতা বজলু ও আয়নাল পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। প্রকাশ্যে অস্ত্রশস্ত্রের মহড়ায় ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে গ্রামের নিরীহ মানুষ। দুপক্ষের দফায় দফায় হামলা-পাল্টা হামলা ঘটনায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরই মধ্যে দুপক্ষের মহিলা ও শিশুসহ ১৭ জন আহত হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছে। মাদকচক্রের হোতা বজলু ও আয়নালসহ অন্যদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি তুলেছে গ্রামবাসী। ফের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে তারা।

জানাগেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের রাঙ্গিয়ারপোতা নতুনপাড়ার ইজাজুলের ছেলে মাহাবুরের ফেনসিডিল বিক্রির ৩০ হাজার টাকা বাড়ি থেকে সপ্তাহখানেক আগে চুরি হয়। একই পাড়ার তারই ফেনসিডিল বহনকারী জন তাহেরের ছেলে আলাল এ টাকা চুরি করে বলে দোষারোপ করা হয়। গতপরশু বুধবার বিকেলে হাতের কাছে পেয়ে আলাল এবং তার পিতা তাহেরকে মারপিট করে মাহাবুর ও বজলু। এ ঘটনার জের ধরে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দোসর মণ্ডলের ছেলে আইনালের নেতৃত্বে রতন, ইকরামুল, ইমাম, আব্বাস, রুস্তম, মিলন জালাল ও সাইফুলসহ ১৮-২০ দলবেধে এসে অপর চোরাকারবারী বজলুর বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় বজলুর ভাই মাহাবুর, জিল্লুর, আইয়ুব আলীর ছেলে শাকের আলী, সবুজ, সিরাজুল, আশরাফুলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করা হয়। এরপরপরই বজলুর নেতৃত্বে অনুরূপ অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালানো হয় আইনালের বাড়িতে। এসময় বজলু ও তার লোকজন আইনালের বাড়িঘর ভাঙচুর করে এবং কুপিয়ে জখম করে রুবিনা, ফেরদৌসী, তাহের, পিপিলা, শরিফা, সুরমা, খোদেজা ও ৭ বছরের শিশু রুবিনাকে। এ ঘটনার এক ঘণ্টার মাথায় আবারও আইনাল ও তার লোকজন এসে বজলুর বাড়িতে হামলা চলিয়ে কুপিয়ে জখম করে বজলু ও আশরাফুলকে। এভাবে উভয় পক্ষের তিন তিনবার হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে।

বজলুর পক্ষ থেকে বলা হয়, আইনাল ও রুস্তম দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পূর্বশত্রুতার জের ধরে এ হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে এবং নিজেদের বাড়িঘর নিজেরা ভাঙচুর করে আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। অপরদিকে আইনালের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বজলু ও তার লোকজন অন্যায়ভাবে ভাড়াকরা লোকজন এনে আমাদের ওপর এ হামলা চালিয়েছে।

মারামারির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বেগমপুর ক্যাম্প পুলিশের সদস্যরা যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, উভয়পক্ষ এলাকার চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা। ফেনসিডিল খোয়া যাওয়াকে কেন্দ্র করে মাদকচোরাকারবারীদের মধ্যকার র্দীঘদিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহির্প্রকাশ এ ঘটনা।