চুয়াডাঙ্গার বোয়ালিয়ায় স্বামী-শাশুড়ির নির্যাতন : মুমূর্ষু অবস্থায় বালিকা বধূ উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার: নির্যাতনকারী স্বামী-শাশুড়ির বাড়ি থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে অপ্রাপ্ত বয়সেই বধূ হওয়া আশাননারা খাতুন। গতকাল শনিবার বিকেলে স্বামীগৃহ চুয়াডাঙ্গার শ্রীকোল-বোয়ালিয়ার আরিফের বাড়ি থেকে আশাননারা খাতুনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়।

গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আশাননার জ্ঞান ফেরেনি। তাকে তার স্বামী-শাশুড়িরা মেরে ধরে মুখে বিষ দিয়ে পিতার বাড়িতে খবর দিয়েছে? নাকি নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে এক বছর বয়সী শিশুসন্তান রেখে আশাননারা নিজেই বিষপান করেছে? এসব প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব মেলেনি। তবে আশাননারার পিতা চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের ঠাকুরপুরের আব্দার আলীর অভিযোগ, মেয়ে আশাননারাকে মেরে মুখে বিষ দিয়ে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নের ঠাকুরপুরের আব্দার আলীর মেয়ে আশাননারার সাথে দু বছর আগে শ্রীকোল-বোয়ালিয়ার আজিজ আলীর ছেলে আরিফের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় আশাননারা চুয়াডাঙ্গা এমএ বারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিলো। বিয়ের কয়েক মাসের মাথায় শুরু হয় নির্যাতন। স্বামী-শাশুড়ি নানা অজুহাতে নির্যাতন করতে থাকে। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে কয়েক দফা আশাননারা পিতার বাড়িতে ফেরে। আর নির্যাতন করা হবে না মর্মে মৌখিক প্রতিশ্রুতিতে স্বামীগৃহে ফেরানো হয় তাকে। স্বামী আরিফ একদিন ঠিক হয়ে যাবে- এই আশায় বুক বেঁধে আশাননারা স্বামীর সংসার আগলে পড়ে থাকে। এক সন্তানও আসে তার কোলজুড়ে। কিছুতেই কিছু হয়নি। নানা অজুহাতে মাঝে মাঝেই নির্যাতনের শিকার হতে হয় আশাননারাকে। গতকাল শনিবার বেলা ১২টার দিকে তাকে মারধর করা হয়। কয়েক ঘণ্টার মাথায় স্বামী আরিফ তার এক আত্মীয়র মাধ্যমে আশাননারার পিতার নিকট খবর দেয়, আশাননারা বিষপান করেছে। এ খবর পেয়ে আশাননারার মা ও ভাই দ্রুত ছুটে যান। বোয়ালিয়াস্থ স্বামীগৃহ থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় আশাননারাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আশাননারা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছিলো।

জ্ঞান না ফেরায় তার নিকট থেকে জানা সম্ভব হয়নি, নিযাতনের এক পর্যায়ে মুখে বিষ দেয়া হয়েছে নাকি নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আশাননারা বিষপানে আত্মহত্যার অপচেষ্টা চালিয়েছে। তবে আশাননারার স্বামীসহ স্বামীগৃহের লোকজনের আচরণ সন্দেহজনক। তাদের কাউকে হাসপাতালে দেখা যায়নি। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, অপ্রাপ্ত বয়সেই আশাননারাকে বিয়ের আসনে বসতে বাধ্য করা হয়। বিয়ের সময় স্বামী আরিফের পছন্দ হয়নি, পিতার পছন্দে বিয়ে করতে বাধ্য হয় বলে আরিফের দাবি। এ কারণেই আরিফ নানা অজুহাতে তার স্ত্রী আশাননারাকে মারপিট করতো।