চুয়াডাঙ্গার পৃথক স্থানে দুর্ঘটনায় দুজন নিহত : আহত ১০

শেয়ালমারি থেকে গরু কিনে দৌলতপুর ফেরার পথে ভালাইপুরে লাটাহাম্বারের সাথে আলমসাধুর ধাক্কা

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার পৃথক স্থানে পৃথক দুর্ঘটনায় দুজন নিহত ও কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়কের ভালাইপুর মোড়ের অদূরে গরুভর্তি লাটাহাম্বার উল্টে গরুব্যবসায়ী যাদু সরদার (৪৫) নিহত হন। তিনি কুষ্টিয়া দৌলতপুরের মাঝদিয়া গ্রামের মৃত ইমান সরদারের ছেলে।

গতপরশু সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়কের ডিঙ্গেদহ হাইওয়ে ফিলিং স্টেশনের অদূরে দুটি মোরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত সুমন (২২) মারা গেছে। গতপরশু রাতে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়। সে চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের বেগনগরের দুখু মিয়ার ছেলে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে নিজ গ্রামের কবরস্থানে তার দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

DSC05241  জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জীবননগরের শেয়ালমারি পশুহাট থেকে ১২টি গরু নিয়ে স্যালোইঞ্জিনচালিত দানবরূপী অবৈধ যান লাটাহাম্বারযোগে ১১ জন ব্যবসায়ী বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলাতপুরের উদ্দেশে রওনা হন। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে লাটাহাম্বারটি ভালাইপুর মোড়ের অদূরে পৌঁছুলে পেছন থেকে অপর একটি অবৈধ যান আলমসাধু অতিক্রম করতে যায়। এ সময় একটির সাথে অপরটির ধাক্কায় দুটিই উল্টে পড়ে। খবর দেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা ফায়ার স্টেশন ও সিভিল ডিফেন্স অফিসে। সিভিল ডিফেন্স সদস্যরা লাল গাড়ি নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান। আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। চিকিৎসার আধাঘণ্টার মাথায় গরুব্যবসায়ী যাদু সরদার মারা যান। আহতদের মধ্যে দৌলতপুরের গাছেরদিয়াড়ের মৃত মনছুর আলীর ছেলে গরুর ব্যাপারি আলা উদ্দীন (৪০), বর্গিরচরের গরুব্যবসায়ী জালাল (৫০), মাঝদিয়ার আমিরুল (৫০) ও ভাজিহাটার বজলুকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়।    অপরদিকে করিমনচালক মেহেরপুর বামনপাড়ার জিল্লুর রহমানের ছেলে বিপ্লবকে (২২) ঘটনার কিছুক্ষণ পর তার করিমনের নিচ থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। তার অবস্থা অবশ্য আশঙ্কামুক্ত। দুর্ঘটনায় নিহত গরুব্যবসায়ী যাদু সরদার ছিলেন তিন ছেলের জনক। দু ছেলে প্রবাসী। মিলন ঢাকায় পড়ে। সাথে থাকা লোকজন এ তথ্য জানিয়ে গতরাতেই লাশ নিজ গ্রামে নেয়ার প্রক্রিয়া করতে থাকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, দুর্ঘটনায় যাদু সরদারের দু পা গুড়িয়ে যায়। ইঞ্জিনের গরম পানিতে শরীরের বেশ কিছু অংশ ঝলসে যায়। হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক সর্বাত্মক চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত বাঁচাতে পারেননি।

অপরদিকে গতপরশু সন্ধ্যার পর চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়কের ডিঙ্গেদহ হাইওয়ে ফিলিং স্টেশনের নিকট দুটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুটি মোটরসাইকেলের ৪ জন আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাতেই চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের বেগনগরের দুখু মিয়ার ছেলে সুমনকে রাজশাহী নেয়ার পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। রাতেই তাকে রাজশাহীর উদ্দেশে নেয়া হয়। পথিমধ্যেই সে মারা যায়। তার লাশ নিজ গ্রামে ফিরিয়ে নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়। এ দুর্ঘটনায় বাকি তিন আহতরা হলো- বেগনগরের রফিকুল ইসলামের ছেলে রাহেন (১৮), জীবননগর আন্দুলবাড়িয়ার লাল্টুর ছেলে পান্না (২৩) ও চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের বদরগঞ্জ ১০ মাইলের শুকুর আলীর ছেলে সোহাগ। পান্না ও সোহাগ একটি মোটরসাইকেলে চুয়াডাঙ্গার উদ্দেশে ছুটছিলো, আর বিপরীতমুখি ছুটছিলো সুমন ও রাহেন।

‌                এদিকে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়কের ডাকবাংলা কলেজের অদূরে বাইসাইকেলের সাথে ধাক্কা থেকে রক্ষা করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আঁছড়ে পড়ে আহত হয়েছেন আলী হোসেন (৪৫)। তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের সরোজগঞ্জ বোয়ালিয়ার মৃত গোলাম হোসেনের ছেলে। স্থানীয় বিএনপি নেতা। তিনি মোটরসাইকেলযোগে ডাকবাংলায় ধনে কেনার উদ্দেশে রওনা হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন। তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে।