চুয়াডাঙ্গার পৃথক স্থানে দু নারীর রহস্যজনক মৃত্যু

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার পৃথক ২ স্থানে দুজন গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা কলোনীর জান্নাতুল ফেরদৌসীকে তার স্বামী মামুন পিটিয়ে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রাখে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ঈদের পরদিন শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে জান্নাতুল ফেরদৌসীর মৃতদেহ তার স্বামীর ঘরের আড়ায় ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের শিবপুরের গৃহবধূ মিতা খাতুনকে ঈদের দিন বিকেলে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। রাত ১০টার দিকে তিনি মারা যান। স্বামীপক্ষের লোকজন বলেছেন, মিতা বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। পিতা পক্ষ প্রথমে এ মৃত্যুকে রহস্যজনক বলে দাবি করে প্রশ্ন তুলে বলেন, ১ বছর বয়সী সন্তান রেখে কি কোনো মা আত্মহত্যা করতে পারে?

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকা কলোনীর জামাত আলীর মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসীর সাথে পার্শ্ববর্তী নূরনগর পুকুরপাড়ার মৃত নিজাম উদ্দীনের ছেলে মামুনের বিয়ে হয়। দীর্ঘ ১৪/১৫ বছরের সংসারে আসে এক কন্যা সন্তান। কন্যা মুনমুন ৫ম শ্রেণির ছাত্রী। ঈদের পরদিন সকাল ১০টার দিকে স্বামীর ঘরের আড়ায় শাড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। স্বামীর লোকজন প্রচার করে জান্নাতুল ফেরদৌস গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। প্রতিবেশীসহ জান্নাতুল ফেরদৌসীর ভাই নাজমুল হোসেনের সন্দেহ, পিটিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রেখেছে যৌতুক লোভী উড়নচণ্ডি মামুন। সূত্র বলেছে, মামুন হিজলগাড়ির একটি ক্লিনিকের এক আয়ার সাথে সম্প্রতি বিশেষ সম্পর্ক গড়ে তোলে। এ কারণে মামুনের সাথে জান্নাতুল ফেরদৌসীর মনোমালিন্য হয়। অভিমানে জান্নাতুল আত্মহত্যাও করে থাকতে পারে। পুলিশ বলেছে, লাশ উদ্ধারের পর শুক্রবারই চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে ময়নাতদন্ত করা হয়। পরে জান্নাতুলের পিতা পক্ষ লাশ গ্রহণ করে কলোনীতে নিয়ে দাফন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।

‌এদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের কুতুপুর ইউনিয়নের শিবপুরের সুমনের স্ত্রী মিতা খাতুনের (২১) রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ঈদের দিন বিকেলে তাকে মৃতপ্রায় অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। বিষ পানের চিকিৎসা দেয়া হয়। ওইদিনই রাত ১০টার দিকে মিতা খাতুন মারা যায়। কেন ঈদের দিন বিষপানে আত্মহত্যা করলো? সন্তোষজনক জবাব মেলেনি। তবে স্বামীগৃহের কয়েকজন বলেছেন, ওদের এক বছর বয়সী সন্তান ঈদের আগের দিন ঘরের পটেই উঠতে গিয়ে পড়ে যায়। এ নিয়ে মিতাকে তার স্বামী মারপিট করে। ঈদের দিনেও মারধর করলে অভিমানে মিতা বিষপান করে। প্রথমে তাকে নেয়া হয় দশমাইলের এক চিকিৎসকের নিকট। পরে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। রাতে মিতা মারা গেলে তার মৃতদেহ পিতার গ্রাম ঝিনাইদহের বুড়া গ্রামে নেয়া হয়। বুড়া গ্রামের কবরস্তানেই দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়।