চুয়াডাঙ্গার চারটি উপজেলায় ক্ষতিকর তামাকচাষ কমেছে

 

অধিক লাভের আশায় তামাকচাষ করছে চাষিরা

মোঃ শাহাবুদ্দিন: জনস্বাস্থ্য ও মাটির জন্য ক্ষতিকর ফসল তামাকচাষ চুয়াডাঙ্গায় কমতে শুরু করেছে। অধিক লাভের আশায় চাষিরা এ চাষ করছে। গতবছরের তুলনায় এ বছর ৪০ হেক্টর জমিতে তামাকচাষ কম হয়েছে।

বিগত বছরগুলোতে ধান, পাট ও সবজি চাষ করে লোকসানের ফলে এলাকার কৃষকরা ব্যাপকভাবে তামাক চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ে। ক্রমাগত ফসলের আবাদ করে লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষিদের। এ কারণে লাভজনক ফসল তামাকচাষ করছে চাষিরা। এ আবাদ নিরুৎসাহিত করতে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষকদের নিয়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ অব্যাহত রাখে। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন বেসরকারি সংস্থা তামাক আবাদ না করতে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে।

চলতি বছর চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৭০৩ হেক্টর জমিতে তামাকচাষ হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদরে ২৫ হেক্টর, আলমডাঙ্গায় ৪০০ হেক্টর, দামুড়হুদায় ১৭৫ হেক্টর ও জীবননগর উপজেলায় ১০৩ হেক্টর জমিতে তামাকচাষ হয়েছে। টোব্যাকো কোম্পানিগুলো তামাকচাষে বেশি মুনাফা দেয়ায় চাষিরা এ আবাদ ছাড়তে পারছে না। মাঠপর্যায়ে কোম্পানির লোকজন সবসময় চাষিদের এ চাষে উৎসাহ জোগাচ্ছে। চাষিরা ইতোমোধ্যে তামাক ভাঙা শুরু করেছে। বাড়ি নিয়ে গিয়ে তামাকঘরে আগুনের তাপের মাধ্যমে তামাক ছেকা শুরু করেছে। আর কদিন পর টোব্যাকো কোম্পানির নিজস্ব ক্রয়কেন্দ্রে তামাক কেনা শুরু করবে। চুয়াডাঙ্গা জেলায় ব্রিটিশ টোব্যাকো, ঢাকা টোব্যাকো ও আবুল খায়ের টোব্যাকো তামাক কিনে থাকে। এরা চাষিদের তামাকচাষ করার জন্য সারসহ অন্যান্য সুবিধা দিয়ে থাকে।

দামুড়হুদার হোগলডাঙ্গা গ্রামের চাষি শফি উদ্দীন জানান, তিনি ৭ বছর ধরে তামাকচাষ করে আসছে। এ বছর ৪ বিঘা জমিতে তামাকচাষ করেছে। বিঘা প্রতি ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে টোব্যাকো কোম্পানি এখনও মূল্য নির্ধারণ করেনি। আশা করছি খরচ বাদ দিয়ে বিঘাপ্রতি ১০/১৫ হাজার টাকা লাভ থাকবে। আগামীতে এ আবাদ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মজলিশপুর গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তামাকচাষি জানান, তিনি এ বছর ১২ বিঘা জমিতে তামাকচাষ করেছেন। অন্য ফসল আবাদ করে লোকসান হওয়ায় অধিক লাভের আশায় তিনি ইচ্ছার বিরুদ্ধেই এ চাষ করেছেন।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হরিবুলা সরকার মাথাভাঙ্গাকে জানান, তামাক স্বাস্থ্যের জন্য যেমন ভয়াবহ ক্ষতিকর, তেমনই জমির জন্যও ক্ষতিকর। তামাকচাষে নিউট্রেন বেশি গ্রহণ করে যা ওই জমিতে পরর্বতীতে ফসলের আবাদ ভালো হয় না। তামাকচাষিদের নিরুৎসাহিত করতে প্রশিক্ষণ ও পরার্মশ দেয়া হচ্ছে। তবে আগামীতে এ আবাদ আরও কমানোর জন্য নানামুখি পদক্ষেপ নেয়া হবে।