চুয়াডাঙ্গার গাইদঘাট ও কুকিয়া-চাঁদপুর কমিউনিটি ক্লিনিক দুটি খোলা না থাকায় দুর্ভোগ চরমে নজরদারি বাড়ানোর দাবি

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গাইদঘাট কমিউনিটি ক্লিনিক খোলা না থাকায় এবং কাউকে না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন রোগী ও অভিভাবকরা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। একই সময়ে অনুরূপ অবস্থা পার্শ্ববর্তী কুকিয়া-চাঁদপুরের কমিউনিটি ক্লিনিকে। অভিভাবকরা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্টদের নজরদারির বাড়ানোর দাবি করেছে।

কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো ছুটির দিন বাদে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত নিরবিচ্ছিনভাবে খোলা থাকার কথা। কিন্তু যথাযথ পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্টদের নজরদারির অভাবে এ সময়ে ক্লিনিকগুলো খোলা থাকছে না এবং সংশ্লিষ্ট কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নের গাইদঘাট কমিউনিটি ক্লিনিকটি ২০০০ সালে স্থানীয় সামসুজ্জোহা জোয়ার্দ্দার এবং কুকিয়া-চাঁদপুরের মো. কিয়ামুদ্দিনের দানের জমির ওপর প্রতিষ্ঠা করা হয়। এলাকাবাসীর প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা উন্নত ও নিশ্চিত করতে ক্লিনিকটি প্রতিষ্ঠা করা হলেও কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার-সিএইসসিপি মেহেদী হাসানের অসহযোগিতার কারণে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার কর্মসূচির অন্যতম গ্রাম পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবার আশা-আকাঙ্ক্ষা ভেস্তে যেতে বসেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে গাইদঘাট দক্ষিণপাড়ার রিপনের স্ত্রী শিউলি ঠাণ্ডা ও জ্বর দেখাতে দু ছেলে ইমন (৬) ও সুমন (২) এবং একই এলাকার শিপনের স্ত্রী আলো তার শিশুপুত্র শাহিনকে দেখাতে ক্লিনিকে যান। কিন্তু ওই সময় কাউকে না পেয়ে এবং ক্লিনিক বন্ধ থাকায় চিকিৎসা না পেয়ে তারা বাড়ি ফিরে যান। এ সময় এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় ভুক্তভোগীদের। কুকিয়া-চাঁদপুরের ক্লিনিকটি সকাল সাড়ে ১০টায় বন্ধ দেখা গেছে।

গ্রামপর্যায়ের জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা সুনিশ্চিত করার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রেভাইডারদের একটি করে ল্যাপটপ, একটি মডেম, একটি স্টেথস্কোপ, ডায়াবেটিক কিটস, ব্লাড প্রেসার (বিপি) মাপার মেশিন এবং ৩১ প্রকার ওষুধ সরবরাহ করা হয়। কিন্তু তাদের অবহেলা ও অসহযোগিতার কারণে দরিদ্র জনগোষ্ঠী সরকারের স্বাস্থ্যসেবা থেকে হরহামেশা বঞ্চিত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার মেহেদী হাসান জানান, অসুস্থতার কারণে মঙ্গলবার ছুটিতে থাকায় ক্লিনিক খোলা হয়নি। ওই ক্লিনিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য সহকারী রুবিনা আক্তারকে পার্শ্ববর্তী কুকিয়া-চাঁদপুর সিসিতে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। পরিবার কল্যাণ সহকারী ছায়েরা খাতুন সপ্তায় তিনদিন সিসির দায়িত্বে থাকলেও তিনিও ঠিকমতো আসেন না।

কুকিয়া-চাঁদপুরের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার আরিফা খাতুন জানান, চুয়াডাঙ্গায় ৬ মাসের ট্রেনিঙে থাকায় তিনি ক্লিনিকে থাকেন না। এ সময়ে দায়িত্বে রয়েছেন রুবিনা আক্তার ও হাসিনা আক্তার চৌধুরী। রুবিনা ডে অফ এবং হাসিনা আক্তার চুয়াডাঙ্গায় মিটিং থাকায় ক্লিনিকটি বন্ধ ছিলো। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার স্বাস্থ্য পরিদর্শক হামিদুল ইসলাম জানান, মেহেদী হাসান ছুটি নেয়ার কোনো তথ্য আমার জানা নেই।

সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. মেজবাহ উল হকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইলফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দিকুর রহমান জানান, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থ্যা নেয়া হবে। এ বিষয়ে সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।