চুয়াডাঙ্গার আলুকদিয়ার টেইপুরে চোর সন্দেহে এক মানসিক প্রতিবন্ধীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম

ভালাইপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার টেইপুরে চোর সন্দেহে এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। গত বুধবার রাত ২টার দিকে গ্রামের কয়েকজন যুবক এ ঘটনা ঘটায়। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে থাকার পর ভোরে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ভালাইপুর মোড়ে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয় পিটুনির শিকার প্রতিবন্ধীকে।
গ্রামবাসীসূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের টেইপুর গ্রামের সালাম হোসেনের বাড়িতে রাত ২টার দিকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি প্রবেশ করে। সালাম টের পেয়ে চোর চোর বলে চিৎকার করতে থাকেন। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে পিটুনি শুরু করে। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়েও কোপানো হয়। গুরুতর আহত হন অজ্ঞাত পরিচয়ের ওই ব্যক্তি। অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায় তারা। ভোরে ঝোড়াঘাটা গ্রামে নামাজ পড়তে যাওয়া মুসল্লিরা তাকে উদ্ধার করেন।
এ বিষয়ে ঝোড়াঘাটা গ্রামের মেম্বার জিয়াউল হক জানান, ভোরে গ্রামের মুসল্লিরা নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় আহত ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করেন। কোথা থেকে আহত হয়েছে সে বিষয়ে খবর নেয়ার জন্য পার্শ্ববর্তী টেইপুর গ্রামের মেম্বার আশরাফ আলীর কাছে মোবাইলফোনে খোঁজ নিই। আশরাফ আলী জানান, রাতে গ্রামের সালাম, বিপুল, টিপু, দিনু ও আলামিন মিলে চোর সন্দহে একজনকে পিটিয়ে আহত করেন। বর্ণনা শুনে মনে হচ্ছে ঝোড়াঘাটায় উদ্ধার হওয়া ওই ব্যক্তিই হবে।
গ্রামের কয়েকজন জানান, ওই ব্যক্তিকে দেখে মনে হচ্ছে মানসিক প্রতিবন্ধী। তাকে এভাবে মারা ঠিক হয়নি। কয়েক বছর আগে এভাবে টেইপুর গ্রামবাসী চোর সন্দহে এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীকে পিটুনি নিয়ে হত্যা করে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আহত ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া যায়নি। ঝোড়াঘাটার মেম্বার জিয়াউল হকের হেফাজতে ছিলেন ওই প্রতিবন্ধী। তিনি চিকিৎসা ব্যবস্থার উদ্যোগ নেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঝোড়াঘাটায় গ্রামে ছেড়ে দিলেও বিকেলের দিকে আবারও টেইপুর গ্রামে ঘুরতে দেখা যায় অজ্ঞাত ব্যক্তিকে।
এদিকে গ্রামবাসী একাধিকবার চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসে ফোন দিয়ে আহত ব্যক্তির উদ্ধারের কথা জানালে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বলা হয় আগে পুলিশে অভিযোগ করেন, পুলিশ আমাদের বললে আমার উদ্ধার করবো। ফায়ার সার্ভিস কতৃপক্ষের এ কথায় ঝোড়াঘাটা গ্রামের ইউপি সদস্য জিয়াউল হকসহ গ্রামের অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, গুরুতর আহত বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীকে চিকিৎসাসেবা দেয়ার আগেই যদি পুলিশে অভিযোগ করে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় তাহলে জনসেবা বা মানবতা গেলো কোথায়। বুদ্ধি প্রতিবন্ধীকে চোরের অভিযোগ তুলে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করা তদন্ত সাপেক্ষে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুদৃষ্টি কামনা করেছে এলাকাবাসী।