চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই পরীক্ষার জন্য রক্তের নমুনা নিয়ে টাকা দাবি

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে দালাল চক্রের উৎপাত অব্যাহত : স্বেচ্ছাসেবীদের কারো কারো অর্থলিপ্সুতার নগ্ন প্রকাশ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে দালালদের উৎপাত লেগেই রয়েছে। গতকালও সকালে হাসপাতালের মেল মেডিসিন ওয়ার্ডের কয়েকজন রোগীর শরীর থেকে পরীক্ষার জন্য আচমকা রক্ত সংগ্রহের পাশাপাশি ১শ করে টাকা দাবি করতেই চমকে ওঠেন রোগী ও রোগীর লোকজন। রক্ত পরীক্ষার জন্য চিকিৎসক বললেন না, চিকিৎসাপত্রেও তেমন কেনো নির্দেশনা নেই। অথচ রক্ত পরীক্ষার জন্য সিরিঞ্জ ভর্তি করে রক্ত নেয়ার পাশাপাশি টাকা দাবি কেনো? প্রশ্ন তুলতেই রক্ত সংগ্রহকারী স্বেচ্ছাসেবী টিটো সদোত্তর দিতে না পেরে উল্টোপাল্টা বলতে শুরু করে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে হাসপাতাল এলাকার বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক ও ক্লিনিক নার্সিং হোমের নিযুক্ত অসংখ্য দালাল দিন-রাত ঘুরঘুর করে। এরা সরল সোজা রোগী ও রোগীর লোকজনকে ভুল বুঝিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে থাকে। হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে ক্লিনিকে নিতে পারলেও মোটা অঙ্কের কমিশন পায় ওরা। অবাক হলেও সত্য যে, ওইসব দালালের সাথে হাসপাতালে কর্মরত কিছু স্বেচ্ছাসেবীও যুক্ত রয়েছে। এরই চাক্ষুস প্রমাণ মেলে গত …… ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে। আকাশ নামের এক দালাল হাতেনাতে ধরা পড়ার পর সে তার যে ক’জন সহযোগির নাম বলে তাদের মধ্যে ….. নামের একজন স্বেচ্ছাসেবীও ছিলেন। তাকে অবশ্য ওইদিন ভ্রাম্যমাণ আদালত সতর্ক করে দেন। এ ঘটনার … দিনের মাথায় গতকাল সকালে হাসপতালেরই প্যাথলজি বিভাগে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কর্মরত টিটো নামের এক ব্যক্তিকে হাসপাতালের মেল মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীদের রক্তের নমুনা সংগ্রহের মধ্য দিয়ে চরম স্বেচ্ছাচারিতারই শুধু নয় অর্থলিপ্সুতারই প্রমাণ মিলেছে।
রোগী ও রোগীর লোকজন অভিযোগ করে বলেছেন, চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার গোপিনাথপুর মাঝেরপাড়ার আব্দুল মজিদ (৬০) গত পরশু থেকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ডা. পরিতোষ কুমার ঘোষ চিকিৎসা দিচ্ছেন। রোগীর রক্ত পরীক্ষার পরামর্শ না দেয়া হলেও গতকাল মঙ্গলবার সকালে রোগীর শরীর থেকে টিটো রক্ত নিয়ে পরীক্ষার খরচা হিসেবে ১শ টাকা দাবি করে। একইভাবেই একই ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আলমডাঙ্গার নাগদাহ দক্ষিণপাড়ার মিজানুর রহমানের শরীর থেকেও রক্ত নিয়ে একইভাবেই টাকা দাবি করে সে। চিকিৎসক রক্ত পরীক্ষার কোনো পরামর্শ না দিলেও কার কথা মতো রক্ত নিচ্ছে, টাকা দাবি করছে? খোঁজ নিতেই চোখ ওঠে কপালে। টোটো সন্তোষজনক জবাব দিতে না পেরে একবার বলে পরিতোষ দাদা, একবার বলে ওই সিরাজই বলেছিলো সকালে রক্ত নিয়ে পরীক্ষা করাতে। চিকিৎসকের নিকট এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজন হলে ব্যবস্থাপত্রেই তা লেখা থাকতো। তেমনটি নেই। অথচ কিছু ব্যক্তি হাসপাতালে যাচ্ছে তাই অবস্থা শুরু করেছে। বিষয়টির প্রতিকার প্রয়োজন।