চালপড়া খাইয়ে দুজনকে চোর অপবাদে মারধর : স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা

 

চুয়াডাঙ্গা হাতিকাটায় অটোরিকশার ব্যাটারি চুরি : চোর ধরতে ওঝার শরণাপন্ন

পুলিশ চালপড়া খাওয়ানোদের না ধরে নির্যাতনের শিকার দুজনকে থানায় নিয়ে রেখেছে গারদে

স্টাফ রিপোর্টার: চালপড়া খাইয়ে চোর সন্দেহে যারা মারপিট করেছে পুলিশ তাদের ধরেনি, ধরেছে যারা পিটুনির শিকার হয়েছেন সেই দুজনকে। গতকাল বিকেলে বেদম প্রহারের পর পুলিশ দুজনকে থানায় নিলে চুয়াডাঙ্গা হাতিকাটার সচেতনমহলে বিরূপ সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনেকেই প্রশ্ন তুলে বলেন, পুলিশও কি তাহলে এখন চালপড়া বিশ্বাস করে?

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের আলুকদিয়া ইউনিয়নের হাতিকাটা গ্রামের আয়ুব আলীর ছেলে আসমাউলের বাড়ি থেকে পরশু বুধবার রাতে অটো রিকশার ৮টি ব্যাটারি চুরি হয়। চোর ধরার জন্য চালপড়া নিয়ে গতকাল ঘুরতে শুরু করেন আসমাউল। বিকেলে তিনি এলাকার বেশ ক’জন অটোচালকসহ সন্দেহভাজনদের চালপড়া খাওয়ায়। প্রকাশ্যে চালপড়ার নাটক করলেও আসমাউল ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে স্থানীয় সচেতন যুবসমাজের কেউই প্রতিবাদ প্রতিরোধ করেনি। চালপড়া খাওয়ানোর এক পর্যায়ে গ্রামেরই সুরুজ ও রাশেদুল বিশ্বাসকে চোর সন্দেহে মারপিট শুরু করা হয়। খবর দেয়া হয় পুলিশে। চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ হাতিকাটা থেকে রাশেদুল বিশ্বাস (২৭) ও সুরুজকে (২৮) থানায় নিয়ে কাস্টডিতে রাখে। ব্যাটারি চোর সন্দেহে দুজনকে ধরে পুলিশে দেয়া হয়েছে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়।

অপরদিকে হাতিকাটা গ্রামের অনেকেই বিরূপ সমালোচনা করে মাথাভাঙ্গাকে বলেছেন, চালপড়া খাওয়ানোর পর মুখের লালায় চাল ভেজেনি বলে দাবি তুলে বলা হয়, রাশেদুল ও সুরুজই ব্যাটারি চুরি করেছে। সুরুজ জানান, আমি আমার অটোর ব্যাটারি দোকান থেকে বাকিতে কিনেছি। বিশ্বাস না হলে চলো দোকানে প্রমাণ করে দিচ্ছি। এসব কথায় প্রভাবশালী আসমাউলসহ তার পক্ষের লোকজনের মন ভরেনি। সুরুজের অটোবাইক থেকে ৫টি ব্যাটারি খুলে নিয়ে আসমাউল দাবি করেন এই ব্যাটারিগুলোই আমার। পিটুনির মাত্রা বেড়ে যায়। পিটুনির পর পিটুনি দেয়ার পাশাপাশি ওরা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ দুজনকে ধরে থানায় নেয়। অথচ চালপড়া খাইয়ে চোর সন্দেহে দুজনকে মারপিট করার মতো গুরুতর অপরাধ করেছে যে আসমাউলসহ তার লোকজন, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনো পদক্ষেপই নেয়নি। সভ্য যুগেও কি চালপড়া বিশ্বাস করা যায়? নাকি শুধু সন্দেহের বশে চোর অপবাদে মারপিট করা যায়? এসব কি সভ্য সমাজের চিত্র?