চার দিনেও ঠিক হয়নি কেরুজ চিনিকলের ভেঙে পড়া বয়লার

মাটিতে পড়ে শুকচ্ছে আখ : হতাশায় দিন কাটছে কর্তৃপক্ষের

 

দর্শনা অফিস: টানা ৪ দিনেও সারিয়ে তোলা সম্ভব হয়নি কেরুজ চিনিকলের ভেঙে যাওয়া বয়লারের ঝুলন্ত ছাদ। অবশেষে ৭৬ বছরের পুরানো বয়লারের সরঞ্জাম পরিবর্তন করা হচ্ছে। রেইন উইক থেকে তৈরি করা হচ্ছে বয়লারের প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ। বয়লার কবে নাগাদ সচল হবে তা এখনো অনিশ্চিত। মিল আঙিনায় ফেলে রাখা আখ রোদে পুড়ে শুকোচ্ছে। চরম হতাশায় দিন কাটছে মিল কর্তৃপক্ষের।

জানা গেছে, ১৯৩৮ সালে কেরুজ চিনিকল প্রতিষ্ঠত হয়। শুরু থেকে এ পর্যন্ত মিলের বড় ধরনের কোনো যন্ত্রাংশ পরিবর্তন করা হয়নি। স্থাপন করা হয়নি নতুন কোনো যন্ত্রাংশ। প্রতিবছর আখ মাড়াই মরসুম শুরুর আগে পুরানো সব যন্ত্রাংশ ঝালাই-মেরামত করে চালানো হয়। যে কারণে আখ মাড়াই কার্যক্রম শুরু থেকে নানা ধরনের সমস্যার মুখোমুখি মোকাবেলা করতে হয় মিল কর্তৃপক্ষকে। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া মিলটির যেন সারা গায়েই ঘা। ফলে মিল কর্তৃপক্ষ কোনটা রেখে কোনটা মেরামত করবে তা নিয়ে পড়তে হচ্ছে চরম বিড়ম্বনায়।

গত মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে মিলের ৪ নং বয়লারের ঝুলন্ত ছাদ ভেঙে পড়ে। এতে বন্ধ হয়ে যায় মাড়াই কার্যক্রম। বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রেহাই পেতে মিলের সবকটি বয়লারের আগুন নিভিয়ে দেয়া হয়েছে। সমস্যার পর থেকে ৩৪ ঘণ্টা বহু চেষ্টায় মেরামত সম্পন্ন করে গত বুধবার বিকেল ৪টার দিকে আখমাড়াই শুরু করা হলেও তা টেকেনি। মাত্র আধঘণ্টার মাথায় ফের আগের দশায় পরিণত হয়। বর্তমান অবস্থায় আগের তুলনায় অনেক ভয়াবহ বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টদের অনেকেই। বয়লারের সমস্যা সমাধান সারিয়ে তুলতে হিমসিম খেতে হচ্ছে মিল কর্তৃপক্ষ। অবশেষে গতপরশু বুধবার রাতে বয়লারের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম তৈরি করতে দেয়া হয়েছে রেইন উইকে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রেইন উইক কর্তৃপক্ষ কেরুজ বয়লারের হ্যাঙ্গারসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ সরবরাহ করার কথা থাকলেও শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কেরুজ চিনিকলে তা এসে পৌছায়নি। যার কারণে বয়লার মেরামত কাজ এখনো রয়েছে পিছিয়ে। এদিকে কবে নাগাদ বয়লার মেরামত কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি মিলের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্তারা। ৪ দিন মিলে আখমাড়াই কার্যাক্রম বন্ধ থাকায় আখচাষিদের দাবির মুখে দু দিনের আখ ওজন করে নিতে বাধ্য হয়েছে মিল কর্তৃপক্ষ। বয়লারের ত্রুটি সারিয়ে না তোলা পর্যন্ত মিলে আখ সরবরাহ না করার জন্য আখচাষিদের অনুরোধ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ আখ ওজন করে মিলের আঙিনা কানায় কানায় ভরে ফেলেছে। খোলা আকাশের নিচে রোদে শুকোচ্ছে হাজার হাজার মেট্রিক ট্রন আখ। এতে চিনি আহরণের হার কমছে বলেও মন্তব্য করেছে বিষেজ্ঞরা।

এ বিষয়ে কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ আজিজুর রহমান বলেছেন, জোরেসোরে বয়লার মেরামত কাজ চলছে। রেইন উইক থেকে তৈরি করতে দেয়া যন্ত্রাংশ মিলে এসে পৌছুলেই বাকি কাজ সম্পন্ন করা হবে।