চাঁদাবাজ শিহাব জনতার হাতে পাকড়াও : পিটুনির পর পুলিশে

স্টাফ রিপোর্টার: চাঁদাবাজ তুফান ওরফে শিহাব অবশেষে এলাকাবসির হাতে ধরা পড়েছে। দাবীকৃত চাঁদার টাকা নিতে এসে ধরাপড়লো সে। গতকাল তাকে হরিনাকুণ্ড শ্রীপুর মাঠ থেকে আকট করা হয়। দাবীকৃত চাঁদার টাকা নিতে গিয়ে জনযুদ্ধের আঞ্চলিক নেতা পরিচয়দানকারী পুরাতন পাঁচলিয়া গ্রামের চিহ্নিত সন্ত্রাসী শিহাবকে আটক করা হয়েছে। ঘোষবিলা গলায়দড়ি ব্রীজের নিকট চাঁদার টাকা দেওয়ার ফাঁদ পেতে রায়সা গ্রামের বকুল ও তার সঙ্গীরা সন্ত্রাসী শিহাবকে তাড়িয়ে ধরে প্রথমে খাসকররা বাজারে নিয়ে যায়। পরে তাকে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার পুরাতন পাঁচলিয়া গ্রামের বাজার পাড়ার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে শিহাব উদ্দিন (৪০) গত ১০ অক্টোবর উপজেলার রায়সা গ্রামের শান বাধা পাড়ার নুরু শাহ’র ছেলে সুদে কারবারি বকুল শাহ’র নিকট নিজেকে জনযুদ্ধের আঞ্চলিক নেতা দাবী করে মোবাইল ফোনে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা চায়। টাকা না দিলে বকুল শাহ’র মাথা কেঁটে নেওয়ার হুমকি ধামকি দেয়। শিহাবের হুমকি ধামকিতে বকুল শাহ ভয় পেয়ে মোবাইল ফোন সেট বন্ধ করে রাখে। পরবর্তীতে গতকাল সকালে মোবাইল ফোন সেট পুনরায় চালু করলে সন্ত্রাসী শিহাব আবারও মোবাইল করে দাবীকৃত চাঁদার টাকার জন্য গালিগালাজ করে। নিরূপায় হয়ে সুদে বকুল শাহ’র এলাকার কয়েকজনকে বিষয়টি জানালে তারা যুক্তি করে সন্ত্রাসী শিহাবকে ধরার ফাঁদ পাতে। পরিকল্পনা মোতাবেক সন্ত্রাসী শিহাবকে ফোন করে দরকষাকষি করে ৫০ হাজার টাকা থেকে চাঁদার টাকার পরিমান ২৫ হাজার টাকায় সাব্যস্ত করা হয়। চাঁদার টাকা কোথায় দিতে হবে? একথা জিজ্ঞাসা করলে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ শিহাব প্রথমে নওলামারী-রামদিয়া মাঠের মাঝে অবস্থিত পুলের কথা বলে। পরে পুনরায় ফোন করে জানায় সেখান থেকে টাকা শিহাব নিতে রাজি নয়। তাকে টাকা দিতে হবে ঘোষবিলা গলায়দড়ি ব্রীজের নিকটবর্তী মাঠের যেখানে একটি বাবলা গাছে ব্যাগ ঝুলানো রয়েছে, সেই ব্যাগের মধ্যে। শিহাবের কথায় বকুল শাহ রাজি না হলে সন্ত্রাসী শিহাব তাকে মোবাইল ফোনে গালাগালি করে এবং সরাসরি সামনে এগিয়ে যেতে বলে। একটু এগিয়ে যেতেই দেখা হয় শিহাবের সাথে। কৌশলে বকুল শাহ ও তার সঙ্গীরা সন্ত্রাসী শিহাবকে ধরতে গেলে দৌড়ে গিয়ে পাশের খাদের পানির মধ্যে ঝাপ দেয়। সেখান থেকে বকুল শাহ ও তার সঙ্গীরা শিহাবকে ধরে প্রথমে খাসকররা বাজারে নিয়ে যায়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদের সময় শিহাব তার সাথে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত হরিণাকুন্ডু উপজেলার তাহেরহুদা ইউনিয়নে ধুলিয়া গ্রামের জিয়া জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দেয়। বেলা ১ টার দিকে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশকে বিষয়টি জানালে এস আই টিপু সুলতান খাসকররা বাজারে গিয়ে সন্ত্রাসী শিহাবকে আলমডাঙ্গা থানায় নিয়ে আসে।

গ্রামের এক কৃষকের হত্যা মামলায় শিহাবের পিতা আব্দুল আজিজ ও তার ৫ ভাইয়ের ফাঁসির আদেশ হয়। জেলেই তার পিতার মৃত্যু হয়। তার অন্যান্য ভাইদের ফাঁসির কার্যকর হলেও শিহাবের ১২ বছরের জেলের আদেশ হয়। দীর্ঘ ১২ বছর জেল খেটে বের হয়ে সে সন্ত্রাসী জগতে পা বাড়ায়। বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করে মোবাইলে চাঁদাবাজি করে আসছিল সে। সম্প্রতিক তার বিরুদ্ধে ডাউকি গ্রামের এক প্রবাসির নিকট মোবাইল ৩ লাখ টাকা চাঁদাবাদীর অভিযোগ উঠে। এবিষয়ে পত্র পত্রিকায় সংবাদও প্রকাশিত হয়। এছাড়া প্রায় ৮/৯ মাস পূর্বে সে নিজ গ্রামের বিদ্যালয় ভবন নির্মাণকালে শোকচা-বাজিতপুর গ্রামে এক নির্মাণ শ্রমিককে চাঁদার দাবীতে অপহরণ করে। ওই মামলায় শিহাবসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়। সে মামলায় বর্তমানে শিহাব জামিনে আছে বলে জানা গেছে।