চলে গেলেন সাংবাদিক এম হাফিজ

 

দৈনিক মাথাভাঙ্গার আলমডাঙ্গার সহকারী ব্যুরো প্রধানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: দৈনিক মাথাভাঙ্গার আলমডাঙ্গার সহকারী ব্যুরো প্রধানবিশিষ্ট সাংবাদিক শিক্ষক এম হাফিজ সকলকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন। ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঈদের আগের দিন তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এম হাফিজ শিক্ষকতার বদৌলতে আলমডাঙ্গায় হাফিজ মাস্টারের হিসেবেই বহুল পরিচিত ছিলেন। তিন দফা জানাজা শেষে জন্মস্থান প্রাগপুর গ্রামে পিতার কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে।

এম হাফিজ চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৮ জুলাইসোমবার সকাল ৯টার দিকে ঢাকার উত্তরা ১নং সেক্টরের জাহানারা প্রাইভেট হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। ওই দিন সন্ধ্যার পর তাকে আলমডাঙ্গায় নেয়া হয়।সাংবাদিক হাফিজ মাস্টারের মৃত্যুতে চুয়াডাঙ্গার সাংবাদিক মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে।

১ম জানাজার নামাজ রাত ৮টার দিকে আলমডাঙ্গা দারুস সালাম ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন, পৌর মেয়র মীর মহিউদ্দিন,দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকার সম্পাদক সরদার আল আমিন,বার্তা সম্পাদক আহাদ আলী মোল্লা,উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী খালেদুর রহমান অরুন, উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ইয়াকুব আলী মাস্টার,উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম মন্টু, পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান, বিআরডিবির চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মুহিত, মিজানুর রহমান মধু, সাংবাদিক হাফিজ মাস্টারের দু ছেলে সুমন ও রাজন, দু ভাই মঞ্জুরুর ও মজিবুল, প্রেসক্লাব সভাপতি হামিদুল ইসলাম আজম ও শাহ আলম মন্টু, আতিয়ার রহমান মুকুল, শরিফুল ইসলাম রোকন, আতিকুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, পিন্টু, ইউনুচ মণ্ডল,কহন কুদ্দুস, মানোয়ার হোসেন, মুরশিদ কলিন, নাজমুল,জামসিদুল হক মুনিসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও আত্মীয়স্বজন।

এরপর ২য় জানাজা রাত ৯টার দিকে তার কর্মস্থল হারদী মীর শামসদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হক, সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার খান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনারুল ইসলাম সাগর,সাইফুর রহমান, আরিফ খান, ইখতেখারুজ্জামান, ওমর খোয়াম, ইউপি সদস্য আব্দুস সাত্তার, ইউপি সদস্য শামসুল হক, নূর ইসলাম, সোহানুর রহমান, আক্তারুজ্জামান, রেজাউল হক, শহিদুল্লাহ খান, মহিদুল হক, নজরুল ইসলামসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারী, ছাত্র, অভিভাবক ও গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তি বর্গ। এসময় সাংবাদিক এম হাফিজ মাস্টারের লাশ একনজর দেখার জন্য এলাকার নারী-পুরুষ, ছাত্র-ছাত্রী ভিড় জমায়।

৩য় এবং শেষ জানাজা রাত ১১টার দিকে তার জন্মস্থান প্রাগপুরে অনুষ্ঠিত হয়। এসময় অন্যান্যের উপস্থিত ছিলেন তার তিন ভাই মঞ্জুরুল ইসলাম, বিলায়েত মাস্টার, মজিবুল ইসলাম, দু ছেলে সুমন ও রাজন, গোলাম কিবরিয়া, মিজানুর রহমান মধু, সিদ্দিক মাস্টার, জুলফিকার আলী, পিন্টু, বদিউল আলম মন্টু, প্রফেসর নুরুদ্দিনসহ প্রাগপুর, ওসমানপুর, কেশবপুর, মোড়ভাঙ্গা, লক্ষ্মীপুর, ঝুটিয়াডাঙ্গার হাজারও মানুষ অংশগ্রহণ করেন। তার লাশ এক নজর দেখার জন্য লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন হাজার হাজার মানুষ। তার মৃত্যুতে সাংবাদিক সমাজসহ সবার মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছাঁয়া।

এম হাফিজ ছিলেন আলমডাঙ্গার সংবাদ জগতে একজন নিষ্ঠাবান কর্মী। মাথাভাঙ্গাসহ বিভিন্ন পত্রিকার সাথে তিনি জড়িত ছিলেন। শিক্ষকতা পেশার পাশাপাশি সাংবাদিকতাকে মনে প্রাণে গ্রহণ করেছিলেন। কয়েক বছর আগে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থতা বোধ করলে চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। সেখানকার ডাক্তাররা তাকে চিকিৎসা দিলেও রোগ নির্ণয় করতে ভুল করেছিলেন। ফলে ওষুধ খেয়েও কোনো কাজ হচ্ছিলো না। অবস্থার অবনতি হলে আনুমানিক দু মাস আগে তাকে ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তার দেহে ধরা পড়ে মারণব্যাধি ক্যান্সার। বাঁচার সম্ভাবনা ক্ষীণ জেনেও তার পরিবার পরিজন উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলেন। মাঝে কিছুদিন অবস্থার উন্নতি হলে তিনি ঢাকা থেকে মোবাইলফোনের মাধ্যমে আলমডাঙ্গার সাংবাদিকসহ শুভাকাক্ষীদের সাথে কথা বলেন। সবার কাছেই তিনি দোয়া চেয়েছিলেন যেন সে আবার সবাই মাঝে ফিরে আসতে পারেন। কিন্তু তার সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। সব মায়া মমতার বাঁধন ছিড়ে তিনি পরপারে পাড়ি জমালেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৫৫ বছর। তিনি দু সন্তানের জনক এবং হারদী মীর সামসুল ইসলাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সিনিয়র সহকারী ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মৃত্যুর সংবাদ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে সবার মাঝে শোকের ছাঁয়া নেমে আসে। তার লাশ আলমডাঙ্গায় নিয়ে তিন স্থানে জানাজা শেষে দাফন করা হয়। তিনটি স্থানে তার জানাজায় কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেয়।

দামুড়হুদা অফিসজানিয়েছে, দৈনিক মাথাভাঙ্গার আলমডাঙ্গার সহকারী ব্যুরোপ্রধান এম হাফিজের মৃত্যুতে দামুড়হুদা প্রেসক্লাব গভীর শোক প্রকাশ করেছে। প্রেসক্লাবের সভাপতি দ্বীন মোহাম্মদ, সম্পাদক এম নূর নবীসহ সকল সদস্য মরহুমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে তার বিদাহী আত্মার প্রতি মাগফেরাত কামনা করেছেন।

সরোজগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন,দৈনিক মাথাভাঙ্গার আলমডাঙ্গার সহকারী ব্যুরো প্রধান হাফিজ মাস্টারের মৃত্যুতে তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোক জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিটের সভাপতি ইলিয়াচ হোসেন,সহসভাপতি হাবিবুর রহমান,রুহুল আমিন,সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান,যুগ্মসম্পাদক আলম আশরাফ,সাংগঠনিক সম্পাদক জীসান আহমেদ রাজু,ক্যাশিয়ার আরিফুল ইসলাম লিন্টুসহ অত্র ইউনিটের সকল সদস্য।