চট্টগ্রামে ১২শ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার: ককটেল ও শক্তিশালী বোমা তৈরির ১২শ কেজি বিস্ফোরকসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গত রোববার থেকে গতকাল সোমবার ভোর পর্যন্ত ঢাকা ও চট্টগ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আউয়াল, আলম, শরিফ ও সাইদুল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তারা বোমা ও বোমা তৈরির উপাদান সন্ত্রাসীদের কাছে বিক্রি করে থাকে। তবে তারা কোনো জঙ্গি কিংবা রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্য কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম। সোমবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মনিরুল ইসলাম বলেন, ক্রেতা সেজে গত রোববার রাজধানী থেকে আউয়ালকে দু কেজি বিস্ফোরকসহ গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে চকবাজার থেকে শরিফ ও লালবাগ থেকে আলমকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরকগুলো শক্তিশালী বোমা তৈরির উপাদান বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়। তাদের তথ্যমতে রোববার রাতে ডিবির সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. নূর আলম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে একটি দল চট্টগামের সদরঘাট থানা এলাকায় সাইদুল ইসলামের ৬তলা বাড়ির ৪র্থ তলায় অভিযান চালায়। সাইদুলের শোবার ঘরের খাটের নিচ থেকে ১২শ কেজি বিস্ফোরক তৈরির উপাদান উদ্ধার করা হয়। বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক মজুদ রাখায় গ্রেফতার করা হয় সাইদুলকে।

মনিরুল জানান, উদ্ধারকৃত বিস্ফোরকে সালফার, লিথিয়াম ও হেক্সা ক্লোরাইড-এই তিন ধরনের উপাদান আছে। এ উপাদানগুলোর সাথে আরও অন্যান্য উপাদান মিশ্রিত করে শক্তিশালী বোমা ও ককটেল তৈরি করা হয়। প্রতি কেজি বিস্ফোরক দিয়ে ২ হাজারের মতো বোমা তৈরি করা যায়।

যুগ্ম কমিশনার বলেন, সাইদুল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, প্রায় সাত বছর যাবত তিনি রাসায়নিক উপাদান ঘরের খাটের নিচে মজুদ করে এ ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন। সাইদুল এসব বিক্রির জন্য খদ্দের খুঁজছিলেন জানিয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, এসব রাসায়নিক উপাদান ব্যবসাযোগ্য। তবে সেক্ষেত্রে লাইসেন্স থাকতে হবে। কিন্তু সাইদুলের কোনো লাইসেন্স নেই। কী কারণে তিনি এসব দ্রব্য মজুদ করেছিলেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এসব দ্রব্য মজুদের নেপথ্যে কোনো জঙ্গি সংগঠনের কিংবা কোনো রাজনীতি দলের সাথে সম্পৃক্ততা আছে কি-না সেটিও দেখা হচ্ছে।

সাংবাদিক সম্মেলনের আগে মিডিয়া সেন্টারে হাজির করা হয় গ্রেফতারকৃত ৪ জনকে। এ সময় সাইদুল সাংবাদিকদের জানান, সাত বছর আগে তিনি একটি ব্যাংকের নিলামে এসব রাসায়নিক উপাদান কিনে সেগুলো মজুদ করে রাখেন। খদ্দের না পাওয়ায় তা বিক্রি করতে পারেননি। ডিবির উপপুলিশ কমিশনার মাশরুর রহমান খালেদ জানান, লাইসেন্স ছাড়া এসব দ্রব্য সাধারণত ব্যাপক নাশকতার উদ্দেশে মজুদ করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে ডিবির উপকমিশনার শেখ নাজমুল আলম ও সাজ্জাদুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।