চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর ঈশা খাঁ ঘাঁটির মসজিদে বোমা হামলা : আহত ৬

চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর ঈশা খাঁ ঘাঁটির মসজিদে বোমা হামলা : আহত ৬
স্টাফ রিপোর্টার: চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় নৌবাহিনীর সংরক্ষিত এলাকায় অবস্থিত দুটি মসজিদে মুসল্লিদের ওপর বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ হামলায় অন্তত ৬ জন মুসল্লি আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দুপুরে বিএনএস ঈশা খাঁ ঘাঁটি সংলগ্ন মসজিদ ও নেভি হাসপাতাল সংলগ্ন মসজিদে এ হামলার ঘটনা ঘটে। জুমার নামাজ শুরুর দু-এক মিনিট পরই অতর্কিতে মুসল্লিবেশে থাকা যুবক পরপর দুটি বোমা ছুড়ে মারে। প্রচণ্ড শব্দে দুটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। প্রায় একই সময়ে ঘাঁটির অভ্যন্তরে নেভি হাসপাতাল সংলগ্ন অপর একটি মসজিদেও একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ সময় মসজিদে মুসল্লিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থল থেকে মুসল্লিরা ৩টি অবিস্ফোরিত বোমাসহ দুজনকে আটক করেন। এর মধ্যে একজনের নাম রমজান আরেকজনের নাম মান্নান। আহতদের মধ্যে ৫ জনকে স্থানীয় নেভি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। একজনকে নেয়া হয়েছে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ)। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্যসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। পুলিশের বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয়করণ টিমও ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার করা বোমা নিষ্ক্রিয় করে। এদিকে সংরক্ষিত এলাকায় মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের পর নগরীর সব প্রবেশপথে বসানো হয়েছে চেক পোস্ট। এছাড়া নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়েও যানবাহনে চালানো হচ্ছে তল্লাশি। ঈশা খাঁ ঘাঁটির বাইরে অতিরিক্ত ৱ্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, পতেঙ্গায় ঈশা খাঁ ঘাঁটিসংলগ্ন নৌবাহিনীর মসজিদে শুক্রবার জুমার নামাজ শুরু হয়। ইমাম যখন সুরা ফাতেহা পাঠ শেষ করছিলেন ঠিক সেই সময়ে মুসল্লিবেশে দু যুবক পরপর দুটি বোমা মুসল্লিদের লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করে। দুটি বোমা প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরিত হলে আতঙ্কিত মুসল্লিরা দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। একপর্যায়ে মুসল্লিরা দু যুবককে আটক করেন। হামলায় আহতদের নাম-পরিচয় বিস্তারিত জানা যায়নি। ঘটনার পরপর বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সংবাদ কর্মীরা পতেঙ্গায় নৌবাহিনীর ঈশা খাঁ ঘাঁটি গেটে সংবাদ সংগ্রহের জন্য গেলেও কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। যেহেতু এটি সংরক্ষিত এলাকা তাই এতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সিএমপির উপ-কমিশনার (বন্দর) হারুনুর রশীদ হাজারীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মসজিদে বোমা হামলার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তবে কারা, কেন এ হামলা করেছে, হতাহত কতোজন, আটক আছে কতোজন, আটকরা কোনো জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্য কি-না এসব বিষয়ে কোনো ধরনের তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, যেহেতু রাষ্ট্রীয় একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহিনীর সংরক্ষিত এলাকায় ঘটনা ঘটেছে তাই এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছুই বলা যাবে না। ইপিজেড থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঘটনাস্থলে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ টিম পৌঁছেছে। অবিস্ফোরিত বোমাগুলো নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা চলছে। এছাড়া ঘটনাস্থলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত হয়েছেন। আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তি : চট্টগ্রামে নৌবাহিনী ঘাঁটির ঈশা খাঁ মসজিদে শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের পর দুটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়েছে। এ মসজিদে বাইরে থেকে মুসল্লিরাও নামাজ পড়তে আসেন। বিস্ফোরণে ৫-৬ জন সামান্য আহত হন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে অবিস্ফোরিত আরও কয়েকটি বিস্ফোরকসহ একজনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্ত চলছে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) কর্মকর্তা মুহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।