চকচকে ধাতুর তৈরি রাধা-কৃষ্ণের মূর্তি উদ্ধার : গোপনকারবারীচক্রের দুজন পাকড়াও

 

চুয়াডাঙ্গা গোয়েন্দা পুলিশের ক্রেতা সেজে সফল অভিযান : ৪০ লাখ টাকা মূল্য হাকানো মূর্তির দাম দর করার সময় ডিবি হাজির

 

স্টাফ রিপোর্টার: চকচকে ধাতুর তৈরি রাধা-কৃষ্ণের মূর্তি স্বর্ণের বলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতানোর পাঁয়তারা করা সঙ্ঘবদ্ধ একটি চক্রের সন্ধান পেয়েছে চুয়াডাঙ্গা গোয়েন্দা পুলিশ। ক্রেতা সেজে মূর্তিসহ আলুকদিয়া আকন্দবাড়িয়ার নাজমুল হককে আটকের পর হকপাড়ার শাজাহানকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বেলগাছির আরিবুল্লাহকে খুঁজতে শুরু করেছে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল।

গতরাত ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের আলুকদিয়া আকন্দবাড়িয়ার আবুল হোসেনের ছেলে নাজমুল হককে (৩৫) মূর্তিসহ গ্রেফতার করা হয়। নাজমুল হক জেলা পরিষদে চাকরি করেন বলে জানিয়েছেন। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বলেছেন, মূর্তিটি কয়েকদিন আগে আমারই সেজো ভাই আজিজুল হক আমাকে বিক্রি করতে দেন। পাওনা ৩০ হাজার টাকা আদায়ের জন্য মূর্তিটি বিক্রি করতে রাজি হই। খদ্দের খুঁজতে থাকি। ছানোয়ারকে বলি। দাম দেয়া হয় ৪০ লাখ টাকা। কয়েকজন খদ্দের গোপনে মূর্তিটি দেখে ফিরে গেছে। শনিবার রাতে কয়েকজন খদ্দের মূর্তিটি দেখছিলো। এমন সময় একদল পুলিশ গ্রেফতার করলো।

মূর্তিটি সেজো ভাই আজিজুল পেয়েছে কোথায়? এ প্রশ্নেরও সরল জবাব দিয়েছেন নাজমুল হক। তিনি বলেছেন, আজিজুল হক দামুড়হুদা ডাকবাংলোর কেয়ারটেকার হিসেবে চাকরি করেন। চুয়াডাঙ্গা হকপাড়ার আব্দুল হালিমের ছেলে শাজাহান মূর্তিটি বিক্রি করতে আজিজুলকে দেয়। এ তথ্য পেয়ে গতরাত সাড়ে ১১টার দিকে অভিযান চালিয়ে ডিবি পুলিশ চুয়াডাঙ্গা হকপাড়া থেকে শাজাহানকে গ্রেফতার করে। শাজাহান মূর্তিটি সোনার বলেই জানতেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য দিয়ে বলেছেন, আমি বেলগাছিতে একটি নার্সারি পরিচর্যা করি। গাছের চারা করে বিক্রি করি। বেলগাছির আরিবুল্লাহ গোপনে মূর্তিটি বিক্রির জন্য দিয়েছিলো। আমি তা বিক্রির জন্য পূর্ব পরিচিত আকন্দবাড়িয়ার আজিজুলকে দিই।

চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই খালিদ, এসআই ইব্রাহিম ও এএসআই জগদীশ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে মূর্তিসহ চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করেছেন। এসআই খালিদ বলেছেন, মূর্তিটি পালিশ দিয়ে চকচকে করে রাখা। শাদা চোখে দেখলে সোনার মতোই মনে হবে। উদ্ধারের পর স্বর্ণকার ডেকে পরীক্ষা করে আমরা নিশ্চিত হয়েছি ওটা কাশার তৈরি। মূল্য যতোই হোক, ওটা ওরা স্বর্ণের বলে মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রির জন্য খদ্দের খুঁজছিলো। এ ধরনের মূর্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রতারণা করা হয়। মূর্তি নিয়ে প্রতারকচক্রের সন্ধান গোপনে পেয়েই অভিযান শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকলকে ধরে আইনে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গোয়েন্দা পুলিশের অভিযান অব্যাহত ছিলো।