ঘুষ বাণিজ্যের সাগরে ভাসছে ঝিনাইদহের বিআরটিএ অফিস

 

অদৃশ্য কারণের্তৃপক্ষ নীরব : দেখার কেউ নেই

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের বিআরটিএ অফিস এখন ঘুষ বাণিজ্যের অথৈই সাগরে পরিণত হয়েছে। আর সেই সাগরে প্রতিনিয়ত হাবুডুবু খেয়ে ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত, হয়রানি হয়েই চলেছেন সাধারণ জনগণ ও ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জের সিংগী গ্রামের সাধারণ ব্যাবসায়ী সুমন দত্ত। অদৃশ্য কারণে কতৃপক্ষ নীরব দেখার কেউ নেই।

সুমন দত্তের অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ থানার সিংগী গ্রামের সুশান্ত দত্তর ছেলে সুমন দত্তর ভগ্নিপতির জন্য একটি ডিসকভার ১০০ সিসির মোটরসাইকেল ক্রয় করলে উক্ত গাড়ির মালিকানা পরিবর্তন ও ডিজিটাল নম্বর প্লেট প্রয়োজন হয়ে পড়ে। পরবর্তিতে সুমন দত্তের সাথে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুরের জনৈক আলী হোসেনের সাথে ঝিনাইদহের বিআরটিএ অফিসের সিঁড়িতে ওঠার সময় দেখা হলে আলী হোসেন বলেন আমি বিআরটিএ অফিসে চাকরি করি। আপনি আমার নিকটে ৮ হাজার টাকা দিলে বিআরটিএ অফিসের সহকারী পরিচালক আহসান আলী মিলনকে অতিরিক্ত অফিস খরচ বাবদ ৩ হাজার টাকা দিলে দুই মাসের মধ্যেই আপনার সমুদয় কাগজ পত্র করে দেবো। অন্যথায় আপনি সরাসরি সহকারী পরিচালক আহসান আলী মিলন স্যারের কাছে গেলে সে, সরাসরি আপনার কাছে অফিস খরচ চাইতে পারবেন না। ফলে নানান অযুহাতে ও কাগজ পত্রের ত্রুটি দেখিয়ে আপনার ফাইল মাসের পর মাস ঘুরাতেই থাকবেন।

আলী হোসেন আরও বলেন, এখানকার বিআরটিএ অফিসের স্টাফদের মাধ্যমে প্রতি ফাইল জমা নেয়ার সময় ১, ২ ও ৩ হাজার টাকা অফিস খরচ বাবদ গ্রাহকদের নিকট থেকে নেন। আলী হোসেনের সমস্ত কথার্বাতা সোনা বোঝার পরেও পরোপুরি বিশ্বাস না হলে, বিআরটিএ অফিসের নিচে ঝিনাইদহ জেলা আইনজীবী সহকারী সমিতির সদস্য বেল্লাল হোসেনের নিকটে নিয়ে যান আলী হোসেনের ওপর আস্থা আনার জন্য। এ সময় আমাকে দোকানে চা খেতে বলে আলী হোসেন ও বেল্লাল হোসেন একটু দুরে গিয়ে আলাপ আলোচনা শেষে বেল্লাল হোসেন আমাকে বলে যে, বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক আহসান আলী মিলন স্যার আলী হোসেনের মাধ্যমে অফিস খরচের টাকা ও ফাইল জমা নেন। আপনি টাকা এবং ফাইল আলী হোসেনের কাছে জমা দেন। দুই মাসের মধ্যেই আপনার কাজ হয়ে যাবে। কাজ না হলে-আমি জামিন থাকলাম, আপনি আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে যাবেন।

সুমন দত্ত অভিযোগে আরও বলেন, আলী হেসেন ও বেল্লালের কথায় রাজি হয়ে সাক্ষী ১ নং মিন্টু চক্রবর্তী ২ নং বিপুল নন্দী উভয় সাং কালীগঞ্জদ্বয়ের সম্মুখে আলী হোসেনের নিকট গাড়ির কাগজ পত্র ও ৮ হাজার টাকা প্রদান করেন। কিন্তু আলী হোসেন কাগজ পত্র ও টাকা নিয়ে আজ প্রায় ১৪ মাস গাড়ির কাগজ পত্র তৈরি করে দেন না। আলী হেসেন ও বেল্লালের নিকট বিআরটিএ অফিসে নিচে এসে গাড়ি কাগজ পত্রের কথা সুমন দত্ত জিজ্ঞাসা করলে তারা দুজনে বিভিন্ন তালবাহানা করে ঘুরাতে থাকে। অবশেষে গত ১৮ সেপ্টেম্বর আলী হেসেন ও বেল্লালের সাথে যোগাযোগ করলে  তারা দুজনে বলে কোনো কাগজ পত্র করে দিতে পারবেন না। আলী হেসেন ও বেল্লাল আরও বলেন আপনার দেয়া টাকা ও কাগজ পত্র বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক ঝিনাইদহ সার্কেল আহসান আলী মিলন স্যারের কাছে জমা আছে। পারলে তার নিকট থেকে আদায় করে নেন। সুমন দত্ত তার ১৪ মাস আগের জমা দেয়া টাকা ফেরৎ চাইলে আলী হেসেন ও বেল্লাল টাকা দিতে অস্বীকার করেন।

এব্যাপারে ঝিনাইদহ বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক ঝিনাইদহ সার্কেল আহসান আলী মিলন এ বলেন, আমি আলী হোসেন ও বেল্লালকে চিনি কিন্তু তারা আমার কাছে কোনো কাগজ পত্র ও টাকা জমা দেননি।