ঘুমের বড়ি সেবনে ভাই বাঁচলেও ইঁদুর মারা বিষ খেয়ে প্রাণ গেলো বোনের

 

আলমডাঙ্গার জামজামি গ্রামে এক টুকরো মাছের জন্য দরিদ্র পরিবারে একসাথে ভাই-বোনের আত্মহনন চেষ্টা

ঘুমের বড়ি সেবনে ভাই বাঁচলেও ইঁদুর মারা বিষ খেয়ে প্রা গেল বোনের

 

জামজামি প্রতিনিধি: দরিদ্র সংখ্যালঘু পরিবারের মা রাখেনি তার ছোট্ট মেয়েটির আবদার। সেই থেকে বলে এসেছে বড় মাছের চাকাটা আজ কিন্তু খেতে চায় স্মৃতি। না এতোটুকু আবদার শুনলেন না মা। অভিমানে স্মৃতি ইঁদুর মারা বিষ খায়। বোন মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে ভাই দিশে হারিয়ে খেয়ে বসে ঘুমের বড়ি। কয়েক ঘণ্টার চিকিৎসায় ভাই প্রাণে বাঁচলেও কয়েক দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে হেরে গেলো তার বোন স্মৃতি। গতকাল সোমবার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে সকাল ৮টার দিকে স্মৃতি মারা যায়।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গার জামজামি গ্রামের সংখ্যালঘু পরিবারের সুনীল দাসের ১ ছেলে ও ২ মেয়ের মাঝে স্মৃতি মেজ। সে জামজামি বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী। পরিবার বলেছে বাবা সুনীল জুতা কালি ও মেরামত করে জীবিকা নির্বাহ করলেও পান্তা জোটেতো লবণ জোটে না। গত প্লেটে শনিবার এক প্রতিবেশী ৩টি মাছের চাকা তাদের বাড়িতে দিয়ে যায়। স্মৃতি সেই থেকে বায়না করে বসে বড় চাকাটি সে খাবে। খেতে বসে ঘটে উল্টো। মা জোছনাবালা দাসী না বুঝেই একমাত্র ছেলে আলমডাঙ্গা ভোকেশনালের ছাত্র সাধনের পাতে বড় চাকাটি তুলে দিতেই খাবার প্লেট ঠেলা দিয়ে উঠে যায় স্মৃতি। অভিমানে ইঁদুর মারা বিষ খায় সে। ভাই সাধন ঘরে গিয়ে দেখে বোন যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে, মুখ দিয়ে লালা ঝরছে। দিশেহারা ভাই সাধন বোনকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে। সেও এক পর্যায়ে ঘুমের বড়ি খায়। দিনভর চিকিৎসায় স্মৃতির সাময়িক সুস্থতা মিললেও রাতে অবস্থার অবনতি দেখে তাকে কুষ্টিয়ার ঝাউদিয়া বাজারের পল্লি চিকিৎসক সোনার কাছে নেয়া হয়। ২৪ ঘণ্টা এ চিকিৎসক স্মৃতিকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করতে ব্যর্থ হয়ে অন্যত্র নিতে বলে। গতকাল সোমবার তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক স্মৃতিকে (১১) মৃত ঘোষণা করেন। সেখানে ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যায় জামজামি বাজারস্থ শ্মশানঘাটে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।