গুম-খুনের প্রতিবাদে চার দিনের কর্মসূচি বিএনপির

স্টাফ রিপোর্টার: সারাদেশে গুম-খুন ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ারমামলা বিশেষ আদালতে স্থানান্তরের প্রতিবাদে দেশব্যাপি চার দিনের কর্মসূচিঘোষণা করেছে বিএনপি। গতকাল দুপুরে দলের নয়া পল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়েদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্মমহাসচিব রিজভী আহমেদ এক সংবাদ সম্মেলনে একর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আগামী ১৭ মে ডেমরায় সমাবেশকরবে বিএনপি। এছাড়া ১৮ মে দেশের সব উপজেলায়, ১৯ মে জেলায় জেলায় এবং২০ মে সব মহানগরীতে প্রতিবাদ সমাবেশ হবে। শনিবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটিরবৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

দলীয় সূত্র জানায়, শনিবার রাতে দলের স্থায়ীকমিটির বৈঠকে দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার পাশাপাশিস্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য গুম-খুনের প্রতিবাদে হরতালের কর্মসূচির ঘোষণারপক্ষে মত দেন। তবে সহিংসতা এড়াতে খালেদা জিয়া তা নাকচ করে দেন। এদিকে রিজভীআহমেদ বলেন, সরকারের কাছে জনগণের জীবনের কোনো মূল্য নেই। বাজারের সস্তাপণ্যের চেয়ে আজ মানুষের জীবনের মূল্য অনেক কম। নারায়ণগঞ্জে ত্বকী হত্যারসঠিক বিচার না হওয়ায় শীতলক্ষ্যা-বুড়িগঙ্গায় এতো লাশ ভেসে উঠেছে। শুধু এসাতজনই নন, শীতলক্ষ্যাসহ দেশের নদীগুলোতে এখন নিরীহ মানুষের অহরহ লাশ ভেসেওঠে। কিন্তু এতো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, মানুষ খুন-গুম-অপহরণ করেওদুষ্কৃতকারীদের গডফাদাররা শাস্তি পাচ্ছে না। তিনি বলেন, দেশের মানুষকেহত্যা করার জন্যই সরকার সন্ত্রাসীদের জেনারেল লাইসেন্স দিচ্ছে।নারায়ণগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও চন্দন সরকারসহ ৭ জনের হত্যারঘটনায় সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী ও তার আত্মীয়স্বজন জড়িত থাকার অভিযোগউঠেছে। সব গুম, খুন, অপহরণের সাথে সরকার জড়িত। শুধু দায়িত্ব থেকে অপসারণকরেই নয়, তাদের বিরুদ্ধে সঠিক ব্যবস্থা নেয়া সরকারের দায়িত্ব।

রিজভী বলেন, জনগণের রক্তপানের তৃষ্ণায় আওয়ামী লীগ সরকার ভয়ঙ্কর ভ্যাম্পায়ারের রূপ ধারণকরেছে। দেশে শকুন আর হায়েনাদের বীভৎস উল্লাস চলছে। বিরোধীদল নির্যাতন করতেকরতে সরকারের চৈতন্য লোপ পেয়েছে। দেশ এখনভয়ঙ্কর-ভুতুড়ে-অন্ধকার-ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। কেবল রাতে নয়, এখনদিনদুপুরে পথ চলতেও গা ছম ছম করে ওঠে। কখন কে কোন দিকে গুম হয়ে যায়। মহানমুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সমপ্রতি বিদেশি বন্ধুদেরদেয়া সম্মাননা ক্রেস্টে স্বর্ণ জালিয়াতির ঘটনা উল্লেখ করে এ ধরনের নিচুকর্মকাণ্ডের জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এখান থেকেও সরকার সাড়ে সাতকোটি টাকা লুটপাট করেছে। দেশের এমন চিত্রে সরকারের দুঃশাসনের বীভৎস চেহারাইউন্মোচিত করেছে। এসব কারণেই সরকার জনগণের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।তাই অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচন দিয়ে একটিজননির্বাচিত সরকার গঠনের সুযোগ করে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এসময় বিএনপির যুগ্মমহাসচিব সালাউদ্দিন আহমেদ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আ.ন.ম এহসানুল হক মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, হারুনার রশিদ, ঢাকামহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালাম, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবিরখোকন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সহদফতর সম্পাদক আসাদুলকরিম শাহিন উপস্থিত ছিলেন। ওদিকে সারাদেশে অপহরণ, গুম, খুনের প্রতিবাদেআগামী ২৪ মে মুন্সীগঞ্জ শহরে জনসভা করবেন খালেদা জিয়া। গতকাল জেলাবিএনপির সভাপতি আবদুল হাই সমাবেশের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অনুমতিচেয়েছেন।