গুজব যেনো পিছু ছাড়ছে না : জীবননগর কালায় অপহরণকারী সন্দেহে ভ্যানচালককে গণধোলাই

জীবননগর ব্যুরো: গুজব যেনো পিছু ছাড়ছে না। এবার অপহরকচক্রের সদস্য সন্দেহে জীবননগর উপজেলার কালা গ্রামে এক নিরাপরাধ ভ্যানচালককে ধরে গণধোলাই দেয়া হয়েছে। রক্তাক্ত জখম অবস্থায় ভ্যানচালক লিটুকে (৩২) পুলিশ উদ্ধার করেছে। গুজবে কান দিয়ে পিছনের দিক থেকে ধর ধর বলে চিৎকার দেয়ার পর সামনে থাকা গ্রামাবাসী এগিয়ে এসে অপহরণকারী সন্দেহে নিরাপরাধ ভ্যানচালক লিটুকে গণধোলাই দেয়া শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। গতকাল সোমবার সকালে এ গণধোলাইয়ের ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জীবননগর উপজেলার মনোহারপুর ইউনিয়নের কালা গ্রামের ঈদগাপাড়ার মিনাজুল ইসলামের মেয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী মারুফা খাতুন (১৬) প্রাইভেট পড়ার উদ্দেশে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বাড়ির সামনের রাস্তায় আসে। এ সময় সেখানে এসে হাজির হয় জীবননগর পুরাতন লক্ষ্মীপুরের শাজাহান আলীর ছেলে ভ্যানচালক লিটু। সে এ সময় মারুফাকে জীবননগর যাবে কি-না জিজ্ঞাসা করে। পরক্ষণে লিটু তার হাত চেপে ধরলে মারুফা চিৎকার দিয়ে ওঠে। এ সময় পেছনের দিক থেকে পালাচ্ছে অপহরণকারী, ধর-ধর আওয়াজ দেয়া হলে সামনে দিক থেকে গ্রামবাসী একজোট হয়ে এসে রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে লিটুকে ধরে গণধোলাই দেয়া শুরু করে। অপরহণচক্রের সদস্য আটকের ঘটনা শুনে মুহূর্তের মধ্যে শ শ নারী-পুরুষ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। তারা অপহরণকারীকে দেখতে অথবা গণধোলাই দেয়ার চেষ্টা করে। ফলে দীর্ঘ প্রায় এক ঘণ্টা জীবননগর-ধোপাখালী রাস্তা চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে জীবননগর থানা থেকে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং রক্তাক্ত জখম ভ্যানচালক লিটুকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে।

গণধোলাইয়ের শিকার ভ্যানচালক লিটু জানায়, সকালে সে কালা গ্রামে ভাড়া নিয়ে যায়। ফিরে আসার সময় রাস্তার পাশে একটি মেয়েকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি। জীবননগরে যাবে কি-না জানতে চাই। এমন সময় ওই স্থান দিয়ে একটি ট্রাক ওভারটেক করতে গেলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কায় আমি হাত ধরে মেয়েটিকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়। এ সময় সে আকস্মিক চলে আসা ট্রাকের শব্দে ভয় পেয়ে চিৎকার দিয়ে ওঠে। তখন কয়েকজন ব্যক্তি অপহরণ করছে বলে চিৎকার করে এবং আমার কিছু বলার আগেই তারা আমার ভ্যান থামিয়ে মারধর করতে শুরু করে।