গাজায় হামলা চলছেই :নিহত আরো ৫০

 

মাথাভাঙ্গা মনিটর: গাজায় ৭২ ঘণ্টার অস্ত্রবিরতি শুরুর পর দু ঘণ্টার মধ্যে তা ভঙ্গ করে আবারোনির্মম হত্যাযজ্ঞ শুরু করলো ইসরাইল। অস্ত্রবিরতির কথা শুনে বাঁচার স্বপ্নদেখা গাজার মানুষগুলোকে আবার ভাসতে হলো রক্তবন্যায়। গতকাল উপর্যুপরিবিমান হামলায় নিহত হয়েছে আরো ৫০ জন। আন্তর্জাতিক মহলের নিন্দা ও হামলাবন্ধের আহ্বান সত্ত্বেও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ইসরাইল।

হামাসের দিক থেকে অস্ত্রবিরতির প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করাহচ্ছে- এমন অভিযোগ তুলে ইসরাইল গতকাল শুক্রবার ফের আক্রমণ শুরু করে। এইহামলায় ৫০ জন নিহত হয়েছেন বলে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তারা আরোজানিয়েছেন, গাজায় তিন সপ্তাহের অভিযানে প্রাণ বলি দেয়া ফিলিস্তিনির সংখ্যাদেড় হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক মহলের প্রচেষ্টায়সর্বশেষ এই ৭২ ঘণ্টার অস্ত্রবিরতিকে প্রাণহানি বন্ধের শুভ ইঙ্গিত হিসেবেধরে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। একের পর ক্ষেপণাস্ত্রহামলায় ধুলিস্মাত করা হলো অগণিত আবাসিক ভবন। ধ্বংসস্তুপের ভেতরে অনেকেআটকা পড়ে আছে বলে জানিয়েছে উদ্ধারকর্মীরা। শুক্রবার গাজার দিয়ার আল বালাহএলাকায় ইসরাইলের ছোড়া একটি কামানের গোলা অবিস্ফোরিত অবস্থায় রাস্তায় পড়েথাকতে দেখা যায়।

জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন ও মার্কিনপররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির প্রস্তাবিত ওই যুদ্ধবিরতি মেনে নেয়ার পরও ঠিক কীকারণে তা ভাঙা হলো, সে বিষয়ে ইসরায়েলের স্পষ্ট কোনো বক্তব্য পাওয়াযায়নি। গাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের সম্মতিতে শুক্রবারস্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে এই অস্ত্রবিরতি শুরু হয়েছিলো। যুদ্ধবিরতির ওইসময়টিতে মিসরের কায়রোতে হামাস ও ইসরাইলের প্রতিনিধিদের আলোচনায় বসারও কথাছিলো।

কীভাবে একটি দীর্ঘমেয়াদী সমঝোতায় পৌঁছানো যায় সে বিষয়ে এইবৈঠকে দুই পক্ষের আলোচনা হবে বলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে উল্লেখ করাহয়। ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির মাত্র দুই ঘণ্টা পার হওয়ার পর দক্ষিণ রাফাএলাকায় ইসরাইলের একটি ট্যাঙ্ক থেকে গোলা নিক্ষেপ হতে দেখেন ঘটনাস্থলেউপস্থিত বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একজন ফটো সাংবাদিক। এ ঘটনার কিছুক্ষণেরমধ্যে তেল-আবিবে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকে দাবি করা হয়, গাজায়হামাস ও অন্যান্য অস্ত্রধারী দলগুলো ঘৃণ্যভাবেযুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনকরছে। তবে হামাস কীভাবে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে- সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যাদেয়নি ইসরাইল।

কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ৮ জুলাই ইসরাইলি অভিযান শুরুর পরগাজায় প্রায় ১৫শমানুষ নিহত হয়েছে যাদের অধিকাংশই সাধারণ নাগরিক ও শিশু।আহত হয়েছে সাত হাজারেরও বেশি মানুষ । অন্যদিকে, গাজার হামাস যোদ্ধাদেরপাল্টা হামলায় ইসরাইলের ৬১ সেনা নিহত হয়েছে। এছাড়া হামাসের রকেট হামলায় তিনইসরায়েলি নাগরিক নিহত হয়েছে বলে সরকারিভাবে জানানো হয়।

ইসরাইলিসেনা আটক:গাজায় এক সেনাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। হামাসযোদ্ধারা তাকে আটক করেছে বলে তারা আশঙ্কা করছে। ইসরাইলের সেনাবাহিনীবলেছে, গাজায় হামাসের সুড়ঙ্গ ধ্বংস অভিযানের সময় ওই সেনা নিখোঁজ হয়। এরআগে ২০০৬ সালে ফিলিস্তিনি গেরিলারা গিলাদ শালিত নামের এক ইসরাইলি সেনাকেআটক করেছিলো। ২০১১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ৫ বছর তাকে আটকে রাখে তারা। পরে ১হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তির বিনিময়ে ওই সেনাকে ছেড়ে দেয়া হয়।