গাংনী উপজেলা নির্বাচনে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ : ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও বোমাবাজি

ভ্রাম্যমাণ আদালত : আওয়ামী লীগের দু কর্মীর কারাদণ্ড তিন কর্মীর অর্থদণ্ড

গাংনী প্রতিনিধি: বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও বোমাবাজির মধ্যদিয়ে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। বেশ ক’টি কেন্দ্রে বিএনপি প্রার্থীদের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া ও জোরপূর্বক ভোট প্রদানের অভিযোগ করেছে বিএনপি। অপরদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিএনপির এ অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করা হয়েছে। অন্তত ২০/২৫টি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ৫ জন। জালভোট দেয়ার অভিযোগে আওয়ামী লীগের দু কর্মীর ১৫ দিন করে কারাদণ্ড ও অন্য অপরাধে তিন কর্মীর অর্থদণ্ডাদেশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে ভোলাডাঙ্গা গ্রামে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থকরা কেশবনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার সময় বাধা সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগ কর্মীরা। এ সময় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। অন্তত ২০/২৫টি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আহত হন বিএনপির ৫ সমর্থক। গুরুতর আহত বশির উদ্দীনকে (৩০) গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার জের ধরে বিএনপি সমর্থকরা ভোলাডাঙ্গা গ্রামের  আওয়ামী লীগ সমর্থক লিয়াকত আলী ও তার ছেলে ফরিদের বাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় তহুরা (৫০) ও সাহারবানু (৩২) আহত হন। এছাড়াও শালদহ, ভবানীপুর, চান্দামারি, মহিষাখোলা, বানিয়াপুকুর ও বাহাগুন্দাসহ বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলা আবার কখনো পাল্টা হামলায় বিএনপির ২১ জন আহত হন। এদেরকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়। অন্যদিকে সিঁন্দুরকোটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জালভোট দেয়ার অপরাধে আওয়ামী লীগকর্মী কাওছার আলী ও বরকত আলীকে ১৫ দিন করে কারাদণ্ড দিয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদ উদ্দীনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই ভ্রাম্যমাণ আদালত কষবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দু আওয়ামী লীগ কর্মীর ৪০ হাজার ও বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এক আওয়ামী লীগকর্মীর কাছ থেকে এক হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

এদিকে গতকাল বিকেলে উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে বিএনপি এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছে, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ২২টি কেন্দ্র দখল করে ব্যালট পেপার ছিনতাই করে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোখলেছুর রহমান মুকুলের দোয়াত-কলম প্রতীকে সিল মারে। এছাড়াও কেশবনগর, চেংগাড়া, সহড়াবাড়িয়াসহ কয়েকটি কেন্দ্র থেকে ১৯ দলীয় জোট প্রার্থীদের এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়। কয়েকটি কেন্দ্রের বাইরের জোট সমর্থক ভোটারদের  মারধর ও কেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়া হয়। ওই কেন্দ্রগুলোতে পুনরায় ভোট দেয়া না হলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন গাংনীর ১৯ দলীয় জোটের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল্লাহ, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দাল হক ও পৌরসভা ২ নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি সুলেরী আলভি। তবে ভোটের ফলাফলের পরে এ বিষয়ে বিএনপির কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।