গাংনীর ষোলটাকা গ্রামের দু শতাধিক পরিবার পানিবন্দি

 

মাজেদুল হক মানিক: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ষোলটাকা গ্রামের দু শতাধিক পরিবারের লোকজন এখন পানিবন্দি। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ না থাকায় বাড়ি ও রাস্তাঘাটে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগীরা মানবেতর জীবন-যাপন করলেও সহসায় ভোগান্তি থেকে মুক্তি মিলছে না।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর জেলাসহ এ অঞ্চলে মৎস্যচাষে যে গ্রামটি বিপ্লব ঘটিয়ে তার নাম ষোলটাকা। গাংনী উপজেলা শহর থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটর পূর্ব দিকে গ্রামটির অবস্থান। এলাকায় পাঙ্গাস মাছ গ্রাম হিসেবে পরিচিত। এই গ্রামটিতে যত্রযত্র পুকুর খনন করে মাছচাষ করা হচ্ছে। এতে গ্রামের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক সমৃদ্ধ হলেও জলাবদ্ধতা পিছু ছাড়ছে না। ষোলটাকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফাতিহা ফিস ফিড মিলসহ সর্দ্দারপাড়ার দু শতাধিক পরিবার জলাবদ্ধার শিকার। এতে স্বাভাবিক জীবন-যাপন চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ষোলটাকা-বানিয়াপুকুর সড়কের বেশিরভাগ জায়গায় দু-তিন ফুট পানির নিচে। এতে মাছ ও মাছের পোনা আনা-নেয়া এবং স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারছে না এলাকার মানুষ।

গ্রামের বয়োবৃদ্ধ মহাদ্দেস আলী বলেন, বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন হতো গ্রামের পূর্ব দিকে অবস্থিত কৈকুড়ি বিলে। বিলের সাথে ছেউটিয়া নদীর সংযোগ রয়েছে। জন্মের পর থেকেই তারা এটি দেখে আসছেন। কিন্তু গত কয়েক বছর আগে পানি নিষ্কাশনের পথে ষোলটাকা গ্রামের আব্দুস সাত্তার, মহাম্মদ আলী, আরফিন মিয়া, সুরুজ আলী ও কাষ্টদহ গ্রামের জিম্বার আলী নিজ নিজ জমিতে পুকুর খনন করে মাছচাষ করছেন। এতে গ্রামের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। তাই জৈষ্ঠ্য মাস থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।

ফাতিহা ফিস ফিড মিলস’র স্বত্বাধিকারী আরিফুল ইসলাম জানান, মিল ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশেপাশে হাঁটু পানি। তাই ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে পারছে না। দুশ্চিন্তায় রয়েছেন অভিভাবকরা। অন্যদিকে মিলে উৎপাদিত মাছের খাবার বিক্রি কার্যক্রমও চরমভাবে বিঘিœত হচ্ছে। গ্রামবাসীর প্রবল দাবির পরও পুকুর মালিকরা পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে রেখেছেন। পুকুরের সাথে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের পথ তৈরির দাবি জানালেন ভুক্তভোগীরা।

ষোলটাকা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ময়নাল হক জানান, এখানে প্রচুর পুকুর ও মৎস্য খামার রয়েছে। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ওই গ্রামে মাছ ও পোনা কেনাবেচা হয়। কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহসহ কয়েকটি জেলায় পাঙ্গাস মাছ ও পোনা সরবরাহ করা হয়। কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে তা বিঘিœত হচ্ছে। তবে ইউনিয়ন পরিষদের অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব নয়।এদিকে উপজেলা মৎস্য অফিসের পক্ষ থেকে জলাবদ্ধতা নিরসনের উদ্যোগে নেয়া হবে বলে জানান গাংনী উপজেলা মৎস্য অফিসার আবুল কালাম।