গাংনীর আমতৈলে দু পক্ষের হামলা পাল্টা হামলা : বোমার বিস্ফোরণ

গাংনী প্রতিনিধি: তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মেহেরপুর গাংনী উপজেলার আমতৈল গ্রামের দু পক্ষের মধ্যে হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর জেরে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় গোটা এলাকায় উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। হামলা ও পাল্টা হামলায় উভয় পক্ষের ৩ জন আহত হয়েছে। তবে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আহতদের মধ্যে একজনকে হারদী স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে এবং বাকিদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, আততৈল গ্রামের মাছব্যবসায়ী লালান হোসেনের মেয়ের সাথে পার্শ্ববর্তী আলমডাঙ্গা উপজেলার হাঁটুভাঙ্গা গ্রামের স্বপন হোসেনের প্রেমের সম্পর্ককে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে দু পক্ষের মধ্যে দোষারোপ চলছিলো। এর জেরে আমতৈল গ্রাম আওয়ামী লীগের সভাপতি মোমিন হোসেনের সাথে গতকাল শনিবার বিকেলে হাটবোয়ালিয়া বাজারে আমতৈল গ্রামের প্রয়াত চেয়ারম্যান সাবদাল হোসেন কালুর ছেলের সঙ্গীয় তুহিনের তর্কবিতর্ক বাধে। এক পর্যায়ে তা হাতাহাতির পর্যায়ে পৌছায়। স্থানীয় লোকজনের হস্তক্ষেপে দু পক্ষের লোকজন যার যার মতো স্থান ত্যাগ করলে পরিবেশ শান্ত হয়। সন্ধ্যার দিকে মোমিন ও তার সহযোগী ষোলটাকা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল হোসেন মোটরসাইকেলযোগে হাটবোয়ালিয়া বাজার থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। গ্রামের কবরস্থানের পাশে পৌঁছুলে হাঁটুভাঙ্গা গ্রামের স্বপন ও তার লোকজন তাদের পথরোধ করে। তাদেরকে লাঠিসোঁটা দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। সেখান থেকে পালিয়ে মোমিন বাড়ি পৌঁছুলে তার পক্ষের লোকজন উত্তেজিত হয়ে পড়ে। তারাও লাঠিসোঁটা নিয়ে তুহিনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এ সময় মনি পক্ষের লোকজনও প্রতিরোধ গড়ে তোলে। দু পক্ষের মধ্যে তীব্র উত্তেজনার মধ্যে বিকট শব্দে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। হামলায় আহত হয় মোমিন ও তার এক সহযোগী। অপরদিকে মনিরুল ইসলাম মনি পক্ষের কাবেদ আলী আহত হন। তাকে আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (হারদী) ভর্তি করা হয়।

এদিকে এ ঘটনার খবর পেয়ে হেমায়েতপুর পুলিশ ক্যাম্পের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশের তৎপরতায় উভয় পক্ষের লোকজন ছত্রভঙ্গ হলে উত্তেজনা কিছুটা কমে আসে।

স্থানীয়সূত্রে আরো জানা গেছে, আমতৈল গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী লালান হোসেনের মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্কের জেরে বছর খানেক আগে তাকে নিয়ে পালিয়ে যায় হাঁটুভাঙ্গার স্বপন। কিছুদিন পর মেয়েকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়। তবে স্বপন পক্ষের লোকজনের স্থানীয় প্রভাবের কারণে এ বিষয়ে কোনো বিচার পায়নি লালানের পরিবার।

ওই ঘটনার পর থেকে লালানের মেয়ে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি নেয়। কয়েকদিন আগে সে বাড়ি ফিরলে স্বপন তার পিছু নেয়। কয়েক দিন থেকে রাতের আঁধারে লালানের বাড়িতে ইটপাটকেল পড়ছিলো। স্বপন ও তার লোকজন এ কাজের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে গতকাল মোমিন হোসেন হাটবোয়ালিয়া বাজারে কথা বলতে গেলে ওই গণ্ডগোলের সূত্রপাত ঘটে।

এ বিষয়ে মোমিন হোসেন জানান, তারা দু দফা হামলা ও মারধর করেছে। প্রতিবাদ করলে বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ করেন মোমিন। তবে মনিরুল ইসলাম মনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, তার পক্ষের লোকজন নয়, ওই পক্ষের লোকজন বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে এবং বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে।

গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকরাম হোসেন জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। হামলার বিষয়ে মামলা দিলে তা গ্রহণ করা হবে। তবে ককটেল বিস্ফোরণের সাথে কারা জড়িত তা চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।