গাংনীতে বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক সমর্থক ও গ্রামবাসীর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া : আহত ১

গাংনীতে বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক সমর্থক ও গ্রামবাসীর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া : আহত ১

স্টাফ রিপোর্টার: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষকের  সমর্থক ও পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার শিমুল হোসেন (৩৪) নামের একজন আহত হয়েছেন। আহত শিমুল হোসেন নওপাড়া গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে।

বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমানকে ৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর শিক্ষা বোর্ড সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে। এরপর থেকে প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন সময়ে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের ওপর হামলা চালিয়ে আসছেন।

সম্প্রতি বিদ্যালয়ে অবৈধভাবে প্রবেশ করে সহকারী শিক্ষক (ধর্মীয়) ওয়াজেদ আলীকে মারধর করেন। এ ঘটনায় শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা বিক্ষোভ মিছিলসহ গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ঘেরাও করে। তারা বিচারের দাবিতে স্মারকলিপি পেশ করে। এ বিষয়ে লাঞ্ছিত ওয়াজেদ আলী বাদী হয়ে গাংনী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জিয়ারুল ইসলাম মুকুল জানান, গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান ও তার ক্যাডার বাহিনীর সদস্য নওয়াপাড়া গ্রামের সাদ আহমেদ, দুলাল হোসেন, হজরত আলীসহ ২০/২৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ সশস্ত্র লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বিদ্যালয়ে তালা ঝুলাতে আসে। এ সময় গ্রামের লোকজন জড়ো হয়ে তাদের প্রতিরোধ করতে এলে গ্রামবাসীর সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে র‌্যাব-৬’র একটি টিম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ নিয়ে এলাকায় প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান ও গ্রামবাসীর মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে। আবারো বেলা আড়াইটার দিকে উভয়পক্ষই সশস্ত্র অবস্থায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় লিপ্ত হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তৃতীয় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শেষ হলেও প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান তার লোকজন নিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জিয়ারুল ইসলাম মুকুলের ভাগ্নে শিমুলকে একা পেয়ে লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। আহত শিমুলকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছে।

জানা গেছে, বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান স্কুল ফান্ডের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ৩ দফায় বরখাস্ত হন। এছাড়া একই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়ায় সহকারী শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক) ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

গাংনী থানার ওসি আকরাম হোসেন জানান, একজন সহকারী শিক্ষকের দায়ের করা অভিযোগটি তদন্ত করা হয়েছে। এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবে এলাকা এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।