গাংনীতে গির্জায় ডাকাত দলের হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন ৪ জন গ্রেফতার

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার চৌঁগাছা জপমালা রাণীর গির্জায় ডাকাতদলের হামলার ঘটনার সন্দেহভাজন হিসেবে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত সোমবার রাত ১১টা থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত গাংনী থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে বিভিন্ন স্থান থেকে এদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো চৌগাছা গ্রামের তিতু মিয়া (৩০), জিয়া উদ্দীন (৩৫), রিপন হোসেন (৩০) ও উল্লাস হোসেন (২৫)। গাংনী থানা পুলিশের পক্ষ থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

অভিযান পরিচালনা করেন গাংনী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল জলিল ও উপসহকারী পরিদর্শক (এএসআই) মাজেদুল ইসলাম। আব্দুল জলিল জানিয়েছেন, এ অভিযানে গাংনী পৌরসভাধীন শিশিরপাড়া, বাঁশবাড়ীয়া ও চৌগাছা গ্রাম থেকে ওই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গির্জায় হামলার ব্যাপারে এদের সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। গির্জা কর্তৃপক্ষের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আজ (বুধবার) তাদের আদালতে প্রেরণ করা হবে।

এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে তিতু মিয়ার পিতা বিএনপি সমর্থক, রিপন হোসেন ও উল্লাস হোসেন ছাত্রদলের কর্মী। রাজনৈতিক উদ্দেশে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এতে প্রকৃত জড়িতরা রেহাই পাবে এবং অপরাধ বেড়ে যাবে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেন, উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু, পৌর বিএনপির সভাপতি ইনসারুল হক ইন্সু ও সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান ডাবুসহ নেতৃবৃন্দ গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানিয়ে তাদের মুক্তি দাবি করেন। আমজাদ হোসেন আরো অভিযোগ করেছেন, তিতুকে সোমবার বিকেলে এবং রিপন ও উল্লাসকে রাত ১১টার দিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু  আইন লঙ্ঘন করে ২৪ ঘন্টার বেশি সময় পুলিশ তাদের থানায় আটকে রেখেছে।

বিএনপির অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাছুদুল আলম জানিয়েছেন, তারা রাজনৈতিক ভাবে অভিযোগ করছে কিন্তু পুলিশের যেটি করা দরকার ঠিক সেটিই করছে। জিয়ার পিতা আওয়ামী লীগ সমর্থক। কাজেই রাজনৈতিক উদ্দেশে কিছু করা হয়নি। তদন্ত আরো কিছুদূর এগোলে বিষয়টি সবার কাছে পরিষ্কার হবে। ২৪ ঘন্টার বেশি সময় আটকের ব্যাপারে তিনি জানিয়েছেন, আইন অনুযায়ী তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার রাত ২টার দিকে চৌগাছা গির্জায় খ্রিষ্টানদের কীর্তন অনুষ্ঠান চলাকালে কয়েকজন ডাকাত হানা দিয়ে ভক্তদের কাছ থেকে মোবাইলফোন ও নগদ টাকা লুটে নেয় এবং গির্জার মালামাল তছনছ করে। সোমবার বিকেলে গির্জার ক্যাটিখিস্ট (ধর্মীয় শিক্ষক) সমর কুমার বিশ্বাস বাদী হয়ে গাংনী থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে একটি মামলা দায়ের করেন।