গাংনীতে উপজেলা পরিষদের জমি দখল করে স্থাপনা : অরক্ষিত বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলা পরিষদের পশ্চিম পাশে সরকারি জমি জবর দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। দখলকারী আশা মিয়া ও সোহরাব হোসেনকে স্থানীয় প্রশাসন বারবার তাগিদ দিলেও তারা অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে না নেয়ায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এদিকে অবৈধ স্থাপনায় থাকা বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে দখলকারীরা।

জানা গেছে, গাংনী উপজেলা পরিষদের পশ্চিম পার্শ্বে আরএস ৬৬২৫ দাগে মৃত একরামুলের ছেলে আশা মিয়া ও সোহরাব হোসেনের বসত বাড়ি। সম্প্রতি তারা স্থায়ী পাঁকা বাড়ি নির্মাণ শুরু করলে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে। জমির সীমানা নির্ধারণের জন্য উভয়পক্ষের আমিন গত ২০ নভেম্বর পৌর কাউন্সিলর, স্থানীয় বাসিন্দা ও পার্শ্ববর্তী জমির মালিকগণের উপস্থিতিতে মাপজোঁক করেন। উভয়পক্ষের সম্মতিতে মাপজোঁক সম্পন্ন করে বাড়ির মালিক সরকারি জমি থেকে তাদের স্থাপনা সরিয়ে নিতে সম্মতি জ্ঞাপন করে। কিন্তু তারা চতুরতার আশ্রয় নিয়ে স্থাপনা না সরিয়ে অন্যের ওপর দোষ চাপাতে থাকে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবৈধ স্থাপনা ভাঙার সিদ্ধান্ত হলেও বাঁধ সাধে পল্লী বিদ্যুতের দুটি মিটার। তাদের পুরোনো বাড়ির ভেঙে ফেলা দেয়ালের এক পাশে অরক্ষিত অবস্থায় মিটার দুটি রয়েছে। তাই মিটার দুটি অপসারণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতার মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গাংনী জোনাল অফিসকে নির্দেশনা দেয়। সেমতে গত রোববার ওই বাড়ি মালিকের বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে পল্লী বিদ্যুত। এতে ক্ষিপ্ত হন বাড়ির মালিকরা। পল্লী বিদ্যুত কর্মকর্তাদের হয়রানি করতে বিভিন্নভাবে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করতে থাকে। তবে শেষ পর্যন্ত দৌড়ঝাঁপ করে সংযোগ পুনঃস্থাপনের অপচেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুত কর্তৃপক্ষ বলেছে, যেহেতু মিটার অরক্ষিত এবং ওই জায়গা উপজেলা পরিষদের তাই বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। মিটার অপসারণ করা হবে। বাড়ির মালিক তার নিজ বাড়িতে ওয়্যারিং সম্পন্ন করলে পুনঃসংযোগ দেয়া হবে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা পরিষদের সরকারি জায়গা থেকে স্থাপনা সরিয়ে না নেয়ায় চলতি বছরের ১৬ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম জামাল আহমেদ স্থাপনা নির্মাণ না করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে একটি পত্র প্রেরণ করেন সোহরাব হোসেনের নিকট। যার স্মারক নম্বর- ০৫.৪৪.৫৭৪৭.০০০.২৫.০০৩.২০১৬-৩৪০। পত্র প্রাপ্তির পরও কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩০ এপ্রিল সোহরাব হোসেনের নিকট আরেকটি পত্র প্রেরণ করেন। পত্রে নিজ খরচে সকল অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তিন মাস গত হলেও তারা অজ্ঞাত কারণে স্থাপনা না সরিয়ে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এতে জনমনে নানান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। যে উপজেলা প্রশাসন একটি উপজেলার অভিভাবক তাদের জমি দখল করে কিভাবে হজম হচ্ছে তা নিয়ে বিরুপ মন্তব্য শুরু করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এ ব্যাপারে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ-উজ-জামান জানান, বিষয়টির আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।