গভীর রাতে সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি ॥ মাইক্রোবাস চালক জখম

চুয়াডাঙ্গা-জীবননগর সড়কের দর্শনা-আকন্দবাড়িয়ার মধ্যবর্তী স্থানে দুর্বৃত্তদলের তা-ব

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা-জীবননগর সড়কের দর্শনা-আকুন্দবাড়িয়ায় মধ্যবর্তী তেলপাম্পের অদূরে সড়কে গাছ ফেলে দুঃসাহসিক ডাকাতি হয়েছে। গতরাত দেড়টার দিকে ডাকাতদল তা-ব চালায়। এ সময় ডাকাতদলের হামলায় মাইক্রোবাসচালক রাসেলকে আহত হন। একটি মাইক্রোবাসছাড়াও ট্রাক ডাকাতির কবলে পাড়ে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছুলে ডাকাতদল পালিয়ে যায়। তার আগে মাইক্রোবাস আরোহীদের নিকট থেকে সোনার ৪টি আংটি, নগদ লক্ষাধিক টাকা ডাকাতদল হাতিয়ে নেয়।
ডাকাতির শিকার মাইক্রোবাস আরোহীদের সকলেই চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগরের দর্শনাস্থ বাসায় রাজনৈতিক আলোচনা শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। এ কারণে তাদের কেউ কেউ প্রশ্ন তুলে বলেছেন, এ ঘটনার আড়ালে অন্য কিছু লুকিয়ে রয়েছে কি-না তা পুলিশের খতিয়ে দেখতে হবে। অবশ্য পুলিশ প্রাথমিকভাবে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছে, সড়কে গাছ ফেলার ধরন দেখে ঘটনাটিকে অভিজ্ঞ ডাকাতদলেরই কা- বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে দামুড়হুদা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজু আহম্মেদ রিংকু বলেছেন, জীবননগর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোয়েব আহম্মেদ অঞ্জন, সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম রাজা, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামিম এবং জুয়েল রানা মাইক্রোযোগে গতকাল রাত ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগরের দর্শনাস্থ বাসায় আসেন। দলীয় আলাপ আলোচনা শেষে রাত দেড়টার দিকে দর্শনা থেকে জীবননগর ফেরার সময় দর্শনা-আকুন্দবাড়িয়া সড়কের তেলপাম্পের অদূরে একটি ট্রাকে ডাকাতি হচ্ছে। বিষয়টি অনুমান করতে পেরে মাইক্রোচালক রাসেল মাইকো দ্রুত ব্যাক গিয়ার মেরে পালিয়ে আসার চেষ্টা করে। এ সময় সংঘবদ্ধ ডাকাতদল ছুটে এসে মাইক্রোবাসের গতিরোধ করে এবং মাইক্রোচালক রাসেলের ডান হাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ মেরে রক্তাক্ত জখম করে। সংঘবদ্ধ ডাকাতদল মাইকোবাসে থাকা ওই ৪ ছাত্রলীগ নেতাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জুয়েল রানার হাতে থাকা ৪ টি সোনার আংটিসহ কাছে থাকা ৫০ হাজার ছিনিয়ে নেয়। এছাড়া অপর দু ছাত্রলীগ নেতা ওয়াসিম ও শামিমের মোবাইলফোন দুটি কেড়ে নেয়। এর কিছুক্ষণ পর বেগমপুর পুলিশ ফাঁড়ির টহলদল ঘটনাস্থলে পৌঁছুলে ডাকাতদল পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। ছাত্রলীগ নেতা সাজু আহম্মেদ রিংকু আরও বলেছেন, এমপি সাহেবের বাসা থেকে বের হওয়ার মাত্র ৫ মিনিটের মাথায় ডাকাতির ঘটনাটি আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। এটা নিছক ডাকাতি না-কি ছাত্রলীগ নেতাদের হত্যার পূর্ব পরিকল্পনা তা অবশ্যই খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে।
বেগমপুর পুলিশ ফাঁড়িড়র ইনচার্জ এসআই মাসনুন আলম বলেছেন, ডাকাতদল পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে গেছে। তাদেরকে গ্রেফতার করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এদিকে চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন সড়কে গাছ ফেলে একের পর এক ডাকাতির ঘটনা ঘটে চললেও পুলিশ সংঘবদ্ধ ওই ডাকাতদলকে গ্রেফতারে ব্যর্থ হওয়ায় পুলিশের দায়িত্ব-কর্তব্য নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
অপরদিকে ঘটনার পর পরই আমাদের বেগমপুর প্রতিনিধি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি পুলিশের সাথে কথা বলে জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশ দুর্বৃত্ত ধরতে অভিযান শুরু করেছে। তবে গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত ছিলো। তেমন কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ।