খোশ আমদেদ মাহে রমজান

 

প্রফেসর মুহাম্মদ ইউসুফ আলী: আজ ১০ রমজান। মহিমান্বিত মাহে রমজানের রহমত দশকের আজ শেষ। কাল থেকে শুরু হচ্ছে পবিত্র মাহে রমজানের মাগফেরাতের দশক। মাগফেরাত অর্থ ক্ষমা। এই মাস মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার মাস এবং ক্ষমা প্রাপ্তির মাস। আমরা যদি আল্লাহর কাছে দিল দিয়ে দোয়া করি এবং মাগফেরাত চাই তাহলে আশা করা যায় মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন আমাদের সমুদয় গুনাহ মাফ করে দেবেন। আমরা যতো বড় পাপিই হই না কেন আল্লাহ তায়ালার রহমত হতে নিরাশ হওয়া উচিত নয়। কারণ আল্লাহ জাল্লা শানুহ এরশাদ করেন, আমার রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন (সুরা যুমার: আয়াত ৫৩)। এই পূণ্যময় মাসে আল্লাহপাক বান্দাদের মাফ করে থাকেন এবং দোয়া কবুল করেন। এক হাদিসে প্রিয় নবী এরশাদ করেন, রমজানের প্রতি দিবারাতে জাহান্নামের কয়েদীদেরকে মুক্তি দেয়া হয় এবং প্রতি দিবারাতে মুসলমানের একটি দোয়া অবশ্যই কবুল করা হয় (তারগিব)। বিভিন্ন বর্ণনায় রমজানে এই দোয়া বেশি বেশি করার কথা বলা হয়েছে; লা ইলাহা ইল্লাল্লহ, আসতাগফিরুল্লহ, নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউযুবিকা মিনান্নার। অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নাই। হে আল্লাহ, আপনার কাছে আমরা মাগফেরাত ও জান্নাত চাচ্ছি এবং জাহান্নামের আগুন থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আরও একটি দোয়ার কথা হাদিসে এসেছে। তা হলো- ইয়া ওয়াছিআল ফাদলি, ইগফিরলী। অর্থ হে প্রশস্ত রহমতের মালিক, আমাকে মাফ করে দাও। রমজান মাসে সব সময়ই দোয়া কবুল হয়, তবে দোয়া কবুলের সবচেয়ে উপযুক্ত সময় ইফতারির ঠিক আগ মুহূর্ত বলে হুজুর (সা.) উল্লেখ করেছেন। কারণ এক হাদিসে রাসুলে কারীম (সা.) এরশাদ করেছেন, তিন ব্যক্তির দোয়া ব্যর্থ হয় না। এক. ইফতারের সময় রোজাদারের দোয়া। দুই. ন্যায়বিচারক বাদশাহের দোয়া। তিন. মজলুমের দোয়া (আহমদ)। রমজান মাস রহমত, বরকত ও মাগফেরাতের মাস। আমরা যদি সবাই মিলে এই মহিমান্বিত মাসে মহান আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে মাফ চায় তাহলে তিনি আমাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দিতে পারেন। কবির ভাষায় বলতে হয়, ‘শোন মুমিন-মুসলমান/ কেঁদে কেঁদে বলো-, ভূল করেছি মাফ করে দাও/ ফেলিস চোখের জল’। (লেখক: অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়)।