খুন না করলে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছিলো লীনা

 

স্টাফ রিপোর্টার: আগের দিনও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিনকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছিলো তানভীর, জিনাস ও মুক্ত। দ্বিতীয় দিনও গিয়াসকে খুন না করে চলে আসার চেষ্টা করে তারা। কিন্তু গিয়াসের স্ত্রী লাভলী ইয়াসমিন লীনা খুন না করলে তাদের ডাকাত বলে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। পরে তানভীর, লীনা, মুক্তি ও জিসান মিলে গিয়াসকে খুন করে।

গিয়াসের স্ত্রী লীনা এবং কলেজছাত্র জিসান ও মুক্ত রিমান্ডে পুলিশকে এ তথ্য জানিয়েছে। মিরপুরে রোববার খুন হন ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয় চারজনকে।

পুলিশ জানায়, লীনা তার পুরনো বন্ধু উজ্জ্বলের সঙ্গে মোটরসাইকেলে বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও গত ৩-৪ মাস থেকে তানভীরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয়। একপর্যায়ে গিয়াসের বাসাতেই মেলামেশা শুরু করে তারা। গিয়াস বেলা ১১টার মধ্যে বাসা থেকে বেরিয়ে রাত ১০টার দিকে ফিরতো। সময় সুযোগ বুঝে লীনা ফোনে তানভীরকে বাসায় ডেকে নিত। কোরবানি ঈদের কয়েক দিন আগে লীনা ও তানভীর নিজেদের মধ্যে বিয়ে নিয়ে আলোচনা করে।

লীনা দু সন্তান ইশিকা ও নেহালকে তাদের বাবা বলে পরিচয় করিয়ে দেয় তানভীরকে। ইশিকা ও নেহাল তানভীরকে বাবা বলেই ডাকতো। বাসা ছাড়াও বোটানিক্যাল গার্ডেন, মিরপুর স্টেডিয়াম এলাকা, বেনারসি পল্লী, বসুন্ধরা সিটিসহ বিভিন্ন স্থানে দেখা করত তারা।

মিরপুর থানার ওসি মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন জানান, এ হত্যাকাণ্ডের মোটিভ অত্যন্ত পরিষ্কার। কৌশলের সাথে লীনার কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়। ১৫ অক্টোবর কাজীপাড়ায় বিয়ের পর থেকে লীনা ও তানভীর পরস্পরকে একান্তে পেতে চায়। তাদের একান্ত মেলামেশায় বাধা ছিলো গিয়াস। তাই তাকে মেরে ফেলার জন্য পরিকল্পনা শুরু করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তার প্ররোচনায় গিয়াসকে খুন করা হয়। সে নিজেও খুনে অংশ নেয়।

ওসি আরও জানান, লীনা অত্যন্ত ধূর্ত। নির্মম এ হত্যাকাণ্ডের পর সে ছিল সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। পুলিশকে নানাভাবে বিভ্রান্তও করার চেষ্টা করে সে। সালাহউদ্দিন বলেন, আমি তাকে অভয় দেই, তার কোনো ক্ষতি হবে না। এরপর কৌশল হিসেবে সন্তানদের তেজগাঁওয়ে ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু লীনা তার সন্তানদের এনে দিতে বলে। তার প্রেমিক তানভীরের কোনো ক্ষতি না করা এবং সে গিয়াসের বাড়িতেই থাকার শর্ত দেয়। পুলিশ কৌশল হিসেবে তার শর্ত মেনে নেয়। পরে লীনা খুনের পরিকল্পনার কথা স্বীকার করে এবং তানভীর, মুক্ত ও জিসানের নাম প্রকাশ করে।