খুদিয়াখালীর কবিরাজকে চোখমুখ বেঁধে কুপিয়ে জখম

শ্মশানঘাট থেকে সোনাবোঝাই হাড়া পাওয়ার কথা বলে বেকায়দায় পাতাড়ী

 

স্টাফ রির্পোটার : আলমডাঙ্গা খুদিয়াখালী গ্রামের পাতাড়ী কবিরাজ এবার বেকায়দায় পড়েছেন। দুর্বৃত্তরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। লক্ষ্মীপুর শ্মশান ঘাট থেকে সোনার হাড়া পেয়েছেন বলে প্রচার  করার ফলে তার এ পরিণতি হয়েছে বলে এলাকার অনেকেই জানিয়েছেন।

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলাধীন জেহালা ইউনিয়নের খুদিয়াখালী গ্রামের দরিদ্র ট্রাক শ্রমিক কবিরাজ পাতাড়ী এলাকায় বহুল আলোচিত। গত শনিবার রাত ১১টার দিকে মুন্সিগঞ্জ পশুহাট থেকে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। খুদিয়াখালী শ্মশান ঘাটের কাছ থেকে ১০/১২ জনের একদল দুর্বৃত্ত তাকে জোরপূর্বক তুলে মাঠে নিয়ে যায়। দুর্বৃত্তরা তার কাছে সোনা দাবি করে। এ সময় সোনা না দিতে পারায় কবিরাজ পরিতোশ কুমার পাতাড়ীকে দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে ট্রেন লাইনের ধারে ফেলে রেখে যায়। গতকাল গ্রামবাসী তাকে উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্তায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

জানা গেছে, গত পরশু রাত ১১টার দিকে খুদিয়াখালী গ্রামের জোতিশ চন্দ্র পাটনি ছেলে ট্রাক লেবার ও বহুল আলোচিত কবিরাজ পরিতোশ কুমার পাতাড়ীকে (৪০) কে বা কারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারত্মক আহত করেছে। এ ব্যাপারে আলোচিত কবিরাজ পাতাড়ী জানান, প্রতিদিনের মতো মুন্সিগঞ্জ পশুহাটের ট্রাকের পান লোর্ড দিয়ে রাত ১১টার দিকে খুদিয়াখালী নিজ বাড়িতে ফিরছিলাম। শ্মশান ঘাটের কাছে আসতেই একদল দুর্বৃত্তরা আমার চোখ বেঁধে ফেলে কাঁধে করে মাঠের মধ্যে দিয়ে যায়। এ সময় আমার কাছে সোনা চাই। আমি সোনা কোথায় পাবো জানালে আমাকে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। এর পর কয়েকজন আবারো কাঁধে তুলে গ্রামের কান্তের মাঠের ট্রেন লাইনের ধারের কবর স্থানের কাছে নিয়ে ডান পায়ের মধ্যে ভোজালী ঢুকিয়ে এপিট এপিট করে দেয়। মাথায় পিঠে ও হাতে বেপরোয়া মারের পর একজন আমার নাকে হাত দিয়ে বলে সালা মরে গেছে। আমি মরার মতো হয়ে পড়ে থাকি। সন্ত্রাসীরা চলে গেলে এর কিছুক্ষন পর আমার জ্ঞান হারিয়ে যায়। জ্ঞান ফেরার পর দেখি ভোরের আজান দিচ্ছে। আমি হামাগুঁড়ি দিয়ে গ্রামে আসি। এবং গ্রামবাসী আমাকে উদ্বার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমি সন্ত্রাসীদের চিনতে পারিনি।

এ ব্যাপারে এলাকাবাসী জানান, বহুল আলোচিত কবিরাজ পাতাড়ী গত ৬/৭ মাস আগে থেকে প্রচার করতে থাকেন তিনি কালী সাধন করে লক্ষ্মীপুরের শ্মশান ঘাট থেকে সাড়ে ৪ কেজি ওজনের সোনার হাড়া পেয়েছেন। এলাকার বহু লোককে সোনা দেয়ার কথা বলে টাকা পয়সা হাতিয়েও নিয়েছেন। সোনা না দিয়ে তাল বাহানা করতে থাকে। গত কয়েক মাস আগে মুন্সিগঞ্জ পশুহাটে এ ভণ্ড কবিরাজকে মারধরও করে এলাকার কয়েকজন পাওনাদার। এরপর থেকে সোনার বিষয়টা ফাঁস হয়ে যায়। এলাকাবাসী আরো জানায়, এ ভণ্ড কবিরাজ মুন্সিগঞ্জ গোয়ালবাড়ি এক মহিলার জিন ধরেছে বলে গৃহবধূর মুখ নাক বেঁধে পানি ঢালে। এ কারণে মহিলার মৃত্যু হয় বলে এলাকায় অভিযোগ উঠেছিলো। কিন্তু বাদির কোনো অভিযোগ না থাকায় সেবারের মতো কথিত পাতাড়ী কবিরাজ রক্ষা পান।