খালেদার জামিন স্থগিত এজলাসে উত্তাপ

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন রোববার পর্যন্ত স্থগিত করেছে আপিল বিভাগ। এ সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)কে লিভ টু আপিল দায়ের করতে বলা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত আপিল বিভাগ গতকাল বুধবার এ আদেশ দেন। দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খানের সাবমিশন শুনেই  আদালত এ আদেশ দেন। এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তাদের বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ দিতে প্রধান বিচারপতির কাছে বারবার দাবি জানান। এজলাস কক্ষে তখন উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়।

শুনানির সুযোগ না পাওয়ার ঘটনাকে নজিরবিহীন হিসেবে আখ্যায়িত করে বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীরা বলেছেন, তারা ব্যথিত ও হতাশ। এদিকে খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিনের ওপর আপিল বিভাগের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে গতকাল বুধবার দুপুরে চেম্বার আদালতে আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। চেম্বার আদালত বিষয়টি আপিল বিভাগে শুনানির জন্য রোববার দিন ধার্য করেন।

সকাল ৯টা ৫ মিনিটে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান শুনানির শুরুতে আদালতকে জানান, খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিনের আদেশের বিরুদ্ধে তারা লিভ টু আপিল করতে চান। কিন্তু আদেশের সত্যায়িত অনুলিপি না পাওয়ায় তা করতে পারেননি। খুরশিদ আলম খান আদালতকে বলেন, হাইকোর্ট চারটি যুক্তি দেখিয়ে খালেদা জিয়াকে জামিন দিয়েছেন। আদেশের কপি পেলে আমরা লিভ টু আপিল করবো। এসময় প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনারা সি পি ফাইল (ক্রিমিনাল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল) করে আসেন। দুদক আইনজীবী বলেন, এখনও আমরা হাইকোর্টের আদেশের সার্টিফায়েড কপি পাইনি। আদালত বলেন, আদেশের কপি পাননি কেন? দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, হাইকোর্টের আদেশের কপি বের হয়েছে গতকাল বুধবার বিকেল ৫টার পরে। যে কারণে আমরা লিভ টু আপিল করতে পারিনি। লিভ টু আপিল করতে আগামী রোববার পর্যন্ত আমাদের সময় দেয়া হোক। এ সময় আদালত বলেন, রোববারের মধ্যে সিপি ফাইল করে আসেন। এ পর্যন্ত স্টে (স্থগিত) থাকবে। এ সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন আদালতের উদ্দেশে বলেন, মাননীয় আদালত, আমাদের বক্তব্য না শুনেই আপনি আদেশ দিয়ে দিলেন। আমাদের বক্তব্য না শুনে তো আপনি আদেশ দিতে পারেন না।  আদালত বলেন, শুনতে হবে না। রোববার পর্যন্ত তো স্টে দিয়েছি। ওই দিন শুনবো।

জয়নুল আবেদীন আদালতের উদ্দেশে উচ্চস্বরে বলেন, আপনি কেন আমাদের কথা শুনবেন না। আপনি একতরফাভাবে কেন আদেশ দেবেন। আমাদেরকে তো শুনতে হবে। এভাবে আদেশ দিলে আদালতের প্রতি পাবলিক পারসেপশন খারাপ হবে। আদালত বলেন, কোর্টকে কোর্টের মতো চলতে দিন। কোর্টকে কোর্টের কাজ করতে দিন। কোর্ট কোনো পাবলিক পারসেপশনে যাবে না। জয়নুল আবেদীন বলেন, চেম্বার আদালত তো স্টে দেয়নি। আর এই সময়ের মধ্যে আসামি বেরও হবেন না। তাই স্টে’র প্রয়োজন নেই। এসময় খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের প্রায় সবাই দাঁড়িয়ে যান।