দুই নেত্রীর কথোপকথন : খালেদাকে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ : হরতাল প্রত্যাহারের আহ্বান

বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার কাছে ফোন দিয়ে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার সন্ধ্যায় ৬টা ২৫ মিনিটে দুই নেত্রীর মধ্যে বহুল প্রত্যাশিত এ ফোনালাপ হয়েছে। ফোনে খালেদা জিয়াকে ২৮ অক্টোবর সোমবার গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দেশ ও জাতির স্বার্থে জ্বালাও পোড়াও  হরতাল প্রত্যাহার করে সংলাপে বসার অনুরোধ জানান। প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাথে দলের সিনিয়র নেতাদেরও নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানান। এছাড়া তাদের মধ্যে কয়েক মিনিট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। বিরোধীদলীয় নেতার প্রেসসচিব মারুফ কালাম খান সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।জানা গেছে, বিরোধীদলীয় নেতার বাসার রেড টেলিফোনটি বিকল থাকায় মোবাইল ফোনেই কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।বিরোধীদলীয় নেতা তার রেড টেলিফোনটি নষ্ট বলে প্রধানমন্ত্রীকে জানালে শেখ হাসিনা সেটি ঠিক করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
এসময় খালেদার পাশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রেস উইং কর্মকর্তা মারুফ কামাল খান সোহেল।
এর আগে শনিবার বেলা সোয়া ১টা থেকে পৌনে ২টার পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে ফোন করেছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব আবুল কালাম আযাদ সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন। এর পর বিএনপির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে রাত ৯টার পর ফোন করা জন্য অনুরোধ করা হয়। কারণ তখন চেয়ারপারসন গুলশান কার্যালয়ে অবস্থান করবেন। কিন্তু রাত ৯টায় প্রধানমন্ত্রীর প্রোগ্রাম থাকায় তিনি এ সময় কথা বলতে পারবেন না বলে জানান। তাই তিনি সন্ধ্যা ৬টায় ফোন করে কথা বলবেন।

দুই নেত্রীর কথোপকথন
শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলীয় নেতাকে বলেন,  ‘কেমন আছেন? আমি আপনাকে দুপুরে ফোন দিয়েছিলাম।’
এরপর কিছুক্ষণ থেমে তিনি বলেন, ‘না, আমি নিজে হাতে লাল টেলিফোন থেকে ফোন করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘১২ বার রিং হয়েছে। যেকোনো কারণে আপনি ধরতে পারেননি।’ অপর প্রান্তের কথার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আচ্ছা ঠিক আছে, আমি দুঃখিত। ফোনটি বিকল ছিল, না বিকল করে রাখা হয়েছে বলতে পারছি না। আগামীকাল এটা আমি দেখব।’
এরপর শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে সোমবার সন্ধ্যায় গণভবনে আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, ‘আগামী নির্বাচন সম্পর্কে গণভবনে এসে কথা বলার জন্য আমি ২৮ তারিখ সন্ধ্যায় দাওয়াত করছি।’ তিনি বলেন, ‘আপনি জানেন ইতিমধ্যে অন্যদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা শুরু করেছি। আমি আপনাকে দাওয়াত দিচ্ছি, আমার সঙ্গে রাতের খাবার খাবেন।’ এরপর প্রধানমন্ত্রী কিছুক্ষণ থামেন। তিনি বলেন, ‘আপনি যতজন খুশি নিয়ে আসতে পারেন।’ এ সময় অপর প্রান্তের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হরতালটি প্রত্যাহার করুন। দেশ, জাতি ও  জনগণের স্বার্থে হরতাল আজকেই প্রত্যাহার করুন।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ জানান, বেলা পৌনে দুইটা থেকে সোয়া দুইটা পর্যন্ত বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার টেলিফোনে চেষ্টা করে কথা বলতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে তিনি আবার জানান, ‘যেহেতু প্রধানমন্ত্রী ফোন করে বিরোধীদলীয় নেত্রীকে পাননি। তাই এবার খালেদা জিয়া সন্ধ্যা ছয়টায় প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করবেন বলে বিরোধীদলীয় নেত্রীর কার্যালয় থেকে আমাকে জানানো হয়েছে।’ পরে সাড়ে ছয়টার দিকে দুই নেত্রীর কথোপকথন হয়।