কয়েক দফা অবরোধ ও ট্রেনে নাশকতার কারণে চুয়াডাঙ্গাসহ পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে চলাচলকারী ১৮টি ট্রিনের সিডিউল বিপর্যয় : চরম দূর্ভোগে শ শ যাত্রী

আরিফুল ইসলাম: কয়েক দফা টানা অবরোধ ও ট্রেনে আগুন ধরানোসহ লাইনের স্লিপার উপড়ে ফেলার কারণে পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে চলাচলকারী ১৮টি ট্রেনের চরম সিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। আর এ কারণে সকালের ট্রেন বিকেলে, বিকেলের ট্রেন মধ্যরাতে, অনেক সময় একদিন পরেও আসছে গন্তব্য স্টেশনে। এতে করে শ শ ট্রেন যাত্রীদের চরম দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।

জানা গেছে, ঘোষিত তফশিল বাতিল ও নিরপক্ষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে কয়েক দফায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোট। সর্বশেষ গত শনিবার থেকে আবারো শুরু হয় ৮৩ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি। যা গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে শেষ হয়েছে। আর এসব কর্মসূচিতে দুষ্কৃতকারীরা ট্রেনে আগুন ধরানোসহ খুলে ফেলছে লাইনের ফিসপ্লেট। কোথাও কোথাও আবার বড় ধরনের নাশকতার জন্য উপড়ে ফেলা হচ্ছে ট্রেনের লাইন। আর এ কারণেই ঘটছে ট্রেন লাইনচ্যুতির ঘটনা। গত এক সপ্তায় পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ১০টি স্টেশনে নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। আর এ কারণে চলাচলকারী ১৮টি ট্রেনের চরম সিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা স্টেশনসূত্রে জানা যায়, অবরোধ শুরু হওয়ার পর চুয়াডাঙ্গা স্টেশন, উথলী স্টেশন, আনছারবাড়িয়া, খুলনা, যশোর ও কুষ্টিয়া স্টেশনসহ কমপক্ষে ১৫টি স্টেশনে আগুন দেয়াসহ দুর্বৃত্তরা লাইনের স্লিপারে আগুন ও ফিসপ্লেট খুলে দেয়ার পাশাপাশি কোথাও কোথাও লাইন উপড়ে ফেলছে। আর এ কারণে ট্রেন বিড়ম্বনা এমন আকার ধারণ করেছে। সকালের ট্রেন বিকেলে, বিকেলের ট্রেন মধ্যরাতে, কখনো আবার পরদিন ট্রেশনে পৌঁছাচ্ছে।           

মঙ্গলবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষারত  মাহির ফয়সাল নামে এক যাত্রী জানান, সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন তিনি। এখন বিকেল ৪টা বাজে। তবুও কাঙ্খিত ট্রেনের দেখা নেয়। কখন আসবে তাও বলতে পারছেন না কেউই। সৈয়দপুর থেকে চুয়াডাঙ্গায় আসা আহসান হাবীব নামে এক বিজিবি সদস্য জানান, সোমবার সন্ধ্যায় সৈয়দপুর থেকে সীমান্ত ট্রেনে চুয়াডাঙ্গার উদ্দেশে রওনা হয়। ট্রেনটি ওই দিনই রাত ১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে পৌঁছানোর কথা। কিন্তু চুয়াডাঙ্গায় এসে নামলাম একদিন পর মঙ্গলবার দুপুরে।

বিউটি আক্তার নামে এক ট্রেনযাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিন্ন ভাষায় বলেন, বিরোধী জোটের অবরোধের কারণে আমরা সড়কে চলাচল করতে পারছি না, ট্রেনে যাবো, তার দশাও করুণ। কখন ট্রেন আসবে, আদৌ আসবে কি-না তারও খবর জানেনা কেউই। এভাবে তো দেশ চলতে পারে না।

নাশকতার কারণে ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয়ের কথা স্বীকার করে চুয়াডাঙ্গা স্টেশনমাস্টার গোলাম হোসেন বলেন, কয়েক দফা অবরোধের কারণে প্রতিটি ট্রেনই ১০ ঘণ্টা থেকে ৩০ ঘণ্টা বিলম্বে চলাচল করছে। আর কাঙ্খিত ট্রেনের অপেক্ষা করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্টেশনগুলোতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে শ শ ট্রেনযাত্রীকে।