ক্রসফায়ারে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না : আসক

 

স্টাফ রিপোর্টার: আইনশৃঙ্খলার অবনতিশীল পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের আশ্রয় নিচ্ছে অভিযোগ করে এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে আইন ও সালিস কেন্দ্র (আসক)। গত কয়েক দিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে কয়েকজন নিহত হওয়ার পর বুধবার এক বিবৃতিতে মানবাধিকার সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। গত এক সপ্তায় ৱ্যাব ও পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে অন্তত তিনজন নিহত হন এবং এ তিনজনই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মী। এসব ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল গতকাল বুধবারই বলেছেন, কয়েকটা বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে। সে বন্দুকযুদ্ধে কয়েকজন মারা গেছে। আমরা কোনো সন্ত্রাসীকে ছাড় দেবো না।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কথায় এবং আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কাজে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অপরাধী দলের হলেও কোনো ছাড় না দেয়ার এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই ইতিবাচক। কিন্তু সে কঠোরতা যদি অপরাধীদের আটকের মাধ্যমে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শাস্তি প্রদান না করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়, তাহলে তা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে কোনো ভূমিকা রাখবে না।

গত সোমবার রাতে মাগুরায় পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছিলেন গর্ভের শিশুকে গুলির মামলার আসামি যুবলীগ সমর্থক আজিবর শেখ। মঙ্গলবার রাতে কুষ্টিয়ায় পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন জাতীয় শোক দিবসে আওয়ামী লীগের দু পক্ষে সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার মামলার আসামি জাকির হোসেন। তার আগে সোমবার রাতে ঢাকায় ৱ্যাবের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার আসামি হাজারীবাগ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আরজু মিয়া।

হাজারীবাগের আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন, বন্দুকযুদ্ধের নামে আরজুকে হত্যা করেছে ৱ্যাব। ৱ্যাব ও পুলিশের বন্দুকযুদ্ধে বা ক্রসফায়ারে নিহতের ঘটনাগুলোকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দাবি করে তার বিরুদ্ধে বরাবরই সরব দেশি ও বিদেশি মানবাধিকার। বিবৃতিতে বলা হয়, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এ ধরনের পদক্ষেপ সন্ত্রাসীদের মদদদানকারী ক্ষমতাবানদের রক্ষার প্রচেষ্টা হিসেবে বিবেচিত হয়। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দল-মত নির্বিশেষে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়ে সেই ব্যবস্থা আইনানুগভাবে করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনটি। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাগুলোর তদন্ত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়ী সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশকে আহ্বান জানিয়েছে।