কোলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

 

দু বাংলাদেশি নাগরিককে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য চরম হয়রানি

লকাতা থেকে ফিরে সালাউদ্দীন কাজল: কোলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুই বাংলাদেশি নাগরিককে চরম হয়রানি, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও দুর্বব্যাবহার করার অভিযোগ উঠেছে। উপ-হাইকমিশনের কর্মকর্তার এহেন ব্যবহার ও হয়রানির শিকার মনিরুল আলম রানা বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলী গ্রামের মৃত আমজেদ হোসেন মল্লিকের ছেলে অমেদুল হক মল্লিক গত ২৩ আগস্ট গেদে ইমিগ্রেশন ও চেকপোস্ট দিয়ে বৈধপথে (পাসপোট নং- বিএফ ০৭৫০৮৫৭) ভারতের ব্যাংগালোরে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ৩১ আগস্ট দুপুরে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওখানকার শ্রী সত্যসায় ইনন্টিটিউট অব হায়ার মেডিকেল সাইন্স হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। অ্যাম্বুলেন্সযোগে তার মৃতদেহ ২ সেপ্টেম্বর সকালে কোলকাতায় আনা হয়। তার মৃতদেহ দেশে আনার ব্যাপারে মনিরুল আলম রানা ও আমি সালাউদ্দীন কাজল দুজনে প্রত্যাবাসন সনদপত্র নেবার জন্য ২ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কোলকাতার পার্কসার্কাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বরণীতে অবস্থিত বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন অফিসে যায়। এ সময় হাইকমিশন অফিসের অভ্যর্থনা কক্ষে অভ্যর্থনার নিমিত্তে দায়িত্বরত কর্মচারী আমাদেরকে প্রত্যাবাসন সনদপত্র দেয়ার সঠিক পরামর্শ দেয়ার পরিবর্তে আমাদের সাথে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও চরম দুর্বব্যাবহার করেন এবং হয়রানি করার উদেশে বলেন, এখনই বিমানযোগে ব্যাংগালোরে গিয়ে ওখানকার যেকোনো থানা থেকে মৃতদেহর নামে একটি জিডি করে আনেন। পরে মৃতদেহ পচন ধরার কারণে অনেক কাকুতি-মিনতি ও অনুরোধ করার ২ ঘণ্টা পর উপ-হাইকমিশনের কাউন্সিলর ও হেড অব চ্যান্সারি মিয়া মাইনুল কবিরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রত্যাবাসন সনদপত্রটি দেন। উপ-হাইকমিশনে ২ ঘণ্টা সময় ক্ষেপনের কারণে মৃতদেহটি গেদে ইমিগ্রেশন ও চেকপোস্টে আনতে রাত সাড়ে ৯টা বেজে যায়। ৭টার সময় ইমিগ্রেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে ওই দিন মৃতদেহটি বাংলাদেশে আর আনা সম্ভব হয়নি। পরদিন ৩ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে ৯টার সময় মৃতদেহটি দেশে আনা হয়।

মৃত অমেদুল হকের ভাই মইদুল মল্লিক অভিযোগ করে বলেন, কোলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশন অফিসের কর্মচারীদের গাফিলতি ও গড়িমশির কারণে মৃতদেহটি গেদে ইমিগ্রেশনে অতিরিক্ত একদিন রাখতে হয়েছে। যার কারণে মৃতদেহ পচে-গলে একবারে নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া অতিরিক্ত এক দিনের কারণে অ্যাম্বুলেন্স মালিককে আরো ২০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।

মৃত অমেদুল হকের স্বজন মনিরুল আলম রানা ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, প্রবাসে হাইকমিশন অফিসই আমাদের অভিভাবক। বিপদে-আপদে সবাই তার ওপরই ভরসা করবে। কিন্তু ভারতের কোলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের কর্মচারীদের বিমাতাসুলভ আচরণ আমাদের চরমভাবে ক্ষুব্ধ করেছে। অফিসের লোকেদের দালালের মাধ্যমে না যাওয়ায় ১০ মিনিটের কাজ ২ ঘণ্টা সময় লাগিয়েছে।

কোলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের কাউন্সিলর ও হেড অব চ্যান্সারি মিয়া মাইনুল কবিরের সাথে মোবাইলে (০০৯১৮৪২০৬১৩৬৪৮, ০০৯১৩৩৪০১২৭৫২২) যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।