কোচিং সেন্টারকে নির্দিষ্ট নীতিমালার অন্তর্ভুক্ত করার দাবি

স্টাফ রিপোর্টার: কোচিংয়ে সেন্টারকে বন্ধ না করে ছায়া শিক্ষা বা সহায়ক শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছে কোচিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। রোববার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে কোচিং মালিকদের এ সংগঠনটি এ দাবি জানায়। একই সঙ্গে তারা আগামী দিনগুলোতে কোচিং সেন্টার বন্ধে কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানায়। লিখিত বক্তব্যে তারা এসব দাবি জানায়।
সংগঠনের আহ্বায়ক ইমাদুল হক লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন,‘স্কুল কলেজের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা আছে বলেই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বসেরা দেশগুলোতে অসংখ্য কোচিং সেন্টার রয়েছে। কোনও কোনও দেশের আইনেও সহায়ক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।

সহায়ক শিক্ষা বিষয়ক ইউনেস্কোর প্রকাশিত প্রবন্ধ পর্যালোচনা করলে শিক্ষার উন্নয়নে সহায়ক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা কোচিং সেন্টারের গুরুত্ব সহজেই অনুধাবন করা যায়। দেশের বেকারত্ব সমস্যা সমাধানেও এসব কোচিং সেন্টার অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। উন্নত বিশ্বের মতো এদেশের শিক্ষার্থীদের ঘণ্টা ভিত্তিক খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ না থাকায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা কোচিং সেন্টারে ক্লাস নিয়ে নিজের পড়ালেখার পাশাপাশি পরিবারের ব্যয়ভার বহন করছেন।

কোচিং সেন্টার বন্ধ হয়ে গেলে উদ্যোক্তা এবং শিক্ষক শিক্ষিকাসহ প্রায় ১৫ লাখ লোক বেকার হয়ে যাবে। তাই আমরা ছায়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্কুল বা কলেজের বেতনভোগী শিক্ষকরা জড়িত নয় এরূপ কোচিং সেন্টার চালু রাখা এবং কোচিং সেন্টারগুলোকে সহায়ক শিক্ষা কেন্দ্র হিসেবে নির্দিষ্ট নীতিমালার অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সারা বছরে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করার সুযোগ পায় ১১৫-১২৫ দিন। এসময় শিক্ষার্থীদের পক্ষে সব বিষয়ের সিলেবাস শেষ করা সম্ভব হয় না। এ সমস্যার সমাধানে তারা কোচিং সেন্টারের সহায়তা গ্রহণ করে। অভিভাবকদের সময়ের স্বল্পতা, মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত অভিভাবকদের বিষয়ভিত্তিক গৃহ শিক্ষক নিয়োগের আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় কোচিং সেন্টারে দ্বারস্থ হন।

এক্ষেত্রে কোচিং সেন্টারগুলো যদি বন্ধ হয়ে যায় তবে শিক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি পাবে এবং নিম্নবিত্ত পরিবার আবারও শিক্ষাবিমুখ হবে।’

প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে কোচিং সেন্টারের কোনও সূত্র নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এবার এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত যাদের নাম পাওয়া যায় তাদের মধ্যে ৪২ জন স্কুল শিক্ষক, ৯২ জন শিক্ষার্থী, ৮৫ জন অন্যান্য পেশায় নিয়োজিত। কোচিং সেন্টারের কয়েকজনের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নভাবে দু’একটি অভিযোগ পাওয়া গেলেও তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

তাই এটা পরিষ্কার, প্রশ্ন ফাঁসের উৎস কোনোভাবেই কোচিং সেন্টার নয়। কেননা প্রশ্ন প্রণয়ন, ছাপানো, বিতরণ কিংবা পরীক্ষা গ্রহণের সঙ্গে জড়িত নয়।

তাই আগামীতে কোচিং সেন্টার বন্ধের সিদ্ধান্ত না নিতে সরকারকে আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি।’