কেরুজ মিলগেট সার গোডাউনে কৃষকদের ঋণের সার চুরি ঘটনার তদন্ত চলছে

 

 

তদন্ত কমিটিকে ম্যানেজের জন্য ছুটছেন অভিযুক্ত গোডাউন ইনচার্জ আবু বক্কর

দর্শনা অফিস: বহুল আলোচিত কেরুজ মিলগেট সার গোডাউন ইনচার্জ আবু বক্কর আবারো কৃষকদের ঋণের সার চুরি করে পড়লেন গ্যাঁড়াকলে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এবারো কি অভিযুক্ত চোর আবু বক্কর ফসকা গেরো থেকে ফসকে যাবে?নাকি বর্শা গেরোই আটকে যাবে?এ প্রশ্ন অনেকেরই মুখ মুখে। তদন্ত কমিটির সদস্যদের ম্যানেজ করতে তাদের পিছু ছুটতে শুরু করেছেন অভিযুক্ত আবু বক্কর ও তার দোশররা। মিল কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতম ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে এগুচ্ছে।

অভিযোগ উঠেছে, চোরের আকড়া কেরুজ সার গোডাউন। এ গোডাউনের ইনচার্জ হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করে আসছেন আবু বক্কর। বহুল আলোচিত আবু বক্কর কৃষকদের বস্তার সার চুরি করে এখন প্রচুর সম্পদের মালিক। তিনি অজ্ঞাত ইশারায় দীর্ঘদিন একই পদে রয়েছেন বহাল তবিয়তে। বারবার চুরি করে ধরা পড়লেও তার বিরুদ্ধে কঠোর কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় দিনদিন চুরির মাত্রা বাড়িয়েছেন। সার চুরির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় তেমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বেশ কয়েক বছর ধরে অন্যান্য চাষের প্রতি ঝুকে পড়ে আখ চাষে আগ্রহ হারিয়েছে কৃষকরা। কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ কৃষকদের আখচাষের প্রতি উদ্বুদ্ধকরণে গ্রহণ করছে নানামুখি পদক্ষেপ। ঠিক তখনো থেমে নেই অভিযুক্ত আবু বক্করের সার চুরির মহড়া। কাউকে তোয়াক্কা না করে কোনো শক্তির জোরে দীর্ঘদিন এ অপকর্মে লিপ্ত রয়েছেন তা বারবারই অজানা রয়ে যায়। কেরুজ চিনিকলের মিলগেট সার গোডাউনের ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন আবু বক্কর। তার সহযোগী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আবুল কাশেম। চিনিকল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কৃষকদের মধ্যে ঋণে সার বিক্রি নিয়মিত রয়েছে। বিঘা প্রতি একজন কৃষককে ১শ ৩৮ কেজি ইউরিয়াসহ অন্যান্য সার বিক্রি করা হয়ে থাকে। এছাড়া মুড়ি আখের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ১শ ৬৮ কেজি। কৃষকরা এ সার চিনিকলের মিলগেট গোডাউন থেকে উত্তোলন করে। মাড়াই মরসুমে আখের মূল্য থেকে ঋণকৃত সারের টাকা কর্তন করা হয়। প্রতিদিনের মতো গত সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কৃষকরা সার উত্তোলন করতে আসে মিলগেট সার গোডাউনে। কৃষকদের জমির হিসাব মোতাবেক ঋনে দেয়া হয় ৫০ কেজির বস্তা ইউরিয়া ও টিএসপি সার। কৃষকরা উত্তোলনের পরপরই অন্যত্র ওজন করে সার। এতে ইউরিয়া সারের ৫০ কেজির বস্তায় ৫/৬ কেজি ও টিএসপি সারের ৫০ কেজির বস্তায় ৮/১০ কেজি কম পাওয়া যায়। এ ঘটনায় আবু বক্করের শাস্তির দাবিতে মিলগেট সার গোডাউন এলাকায় কৃষকরা বিক্ষোভ শুরু করে। খবর পেয়ে মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবীদ আজিজুর রহমান দ্রুত ঘটনাস্থলে পাঠান এডিএম আব্দুল কাইয়ুমকে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত আবু বক্করের পক্ষে কথা বলে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন আব্দুল কাইয়ুম। পরে ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুর রহমান ঘটনার সঠিক তদন্তের জন্য গঠন করেন তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। এ কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে মিলের ডিজিএম সম্প্রসারণ আলাউদ্দিন। অন্যরা হলেন- সহকারী ব্যবস্থাপক (পার্সনাল) আব্দুল ফাত্তাহ ও সহব্যবস্থাপক (হিসাব) শাহদত হোসেন। তিন সদস্যের এ কমিটি ইতোমধ্যেই তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছেন।

এদিকে তদন্ত কমিটিকে ম্যানেজ করতে অভিযুক্ত আবু বক্কর শুরু করেছে দৌঁড়ঝাঁপ। অভিযোগ উঠেছে, আবু বক্কর দম্ভক্তি করে বলেছেন, যা করেছি সবাইকে ম্যানেজ করেই করেছি। প্রয়োজনে তদন্ত কমিটির পেছনে টাকা ঢালবো। ম্যানেজ করতে যা যা প্রয়োজন তাই করা হবে। মিলের এমডি আজিজুর রহমান বলেছেন, চিনিকলের প্রাণ আখচাষিদের সকল সুবিধা নিশ্চিতকরণে যা যা করা দরকার তা করা হবে। চাষিদের যেই ঠেকাকনা কেন তার বিরুদ্ধে নেয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা।