কেরুজ জমি উদ্ধারে প্রতিরোধ : কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থল ত্যাগ

আলমডাঙ্গার ঘোলদাড়ি বাণিজ্যিক খামারের হোসেনপুর মাঠের ৩৮ একর জমি বেদখল

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় কেরু অ্যান্ড কোম্পানির আলমডাঙ্গা ঘোলদাড়ি বাণিজ্যিক খামারের হোসেনপুর মাঠে বেদখলে থাকা ৩৮ একর জমি উদ্ধারে গিয়ে প্রতিরোধের মুখে পড়েছে উদ্ধারকারী দল। আলমডাঙ্গার এসিল্যান্ড নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসিফুর রহমান, কোম্পানির কর্মকর্তা ও পুলিশ সাথে নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে হোসেনপুর মাঠের জমি উদ্ধার করতে গেলে গ্রামের নারী-পুরুষেরা লাঠিসোঁটা নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। অবস্থা বেগতিক দেখে কর্মকর্তারা পিছু হটেন।

এরপর ঘোলদাড়ি জিকে খালের পাশে দু’পক্ষ তাৎক্ষণিক বৈঠকে বসে। বৈঠকে জমির ভোগদখলকারীরা তাদের কাগজপত্র দেখানোর জন্য এক সপ্তা সময় চেয়ে নেয়। এরপর কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- কেরু অ্যান্ড কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক (খামার) ইমতিয়াজ হোসেন, সহকারী ব্যবস্থাপক (খামার) নজরুল ইসলাম, ঘোলদাড়ি খামারের ইনচার্জ মোস্তফা কামাল, সিনিয়র সার্ভেয়ার জিন্নাত আলী, আলমডাঙ্গা থানার এসআই জিয়াউল হক ও ঘোলদাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এএসআই আব্দুল মজিদ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কেরুর ঘোলদাড়ি বাণিজ্যিক কৃষি খামারের কাগজে কলমে মোট জমি ৪০৭ দশমিক ১৮ একর। এর মধ্যে ১৩৯ একর দীর্ঘদিন ধরে বেদখল হয়ে রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে দখলদাররা আরও ৩৮ একর জমি জোরপূর্বক দখলে নিয়ে ধান ও ভুট্টাসহ বিভিন্ন শস্য আবাদ করছে। এ বিষয়ে আদালতে পাল্টাপাল্টি অসংখ্য মামলা চলমান।

১৯৪২ সালের ২৭ জুন প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের মেদেনীপুর জমিদারি কোম্পানি লিমিটেডের কাছ থেকে মেসার্স কেরু অ্যান্ড কোম্পানি জমিটি পায়। সেই থেকে ওই জমির বিপরীতে খাজনাপত্র সবই পরিশোধ করে আসছে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি এবং আখের মৌসুমে বেশিরভাগ জমিতেই আখচাষ করে আসছে। এ অবস্থা চলতে থাকায় দীর্ঘদিন ধরে কোম্পানির সাথে গ্রামবাসীর বিরোধ চলে আসছে। এ ঘটনায় গ্রামবাসীর অনেকেরই জেল খাটতে হয়েছে।

এদিকে গ্রামবাসীর পক্ষে আব্দুল মান্নান জানান, কেরু কোম্পানি জমি বিক্রির ইচ্ছে প্রকাশ করলে তারা জমিটি কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ জমির জন্য ছয়জন টাকাও জমা দেয়। এরা হলেন- শামসুল হক, আবুল হোসেন, শফিউদ্দিন আহমেদ, হায়দার আলী বিশ্বাস ,সলেমান হোসেন ও জহির উদ্দিন বিশ্বাস। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তারা কেউই জমি রেজিস্ট্রি করতে পারেনি। তারপরও এসব জমিতে তারা বংশ পরম্পরায় জমিতে চাষ করে আসছে। এখন কেরু কোম্পানি জমির ক্রেতাদেরকে বলছেন, পূর্বে জমাকৃত টাকা ফেরত নেয়ার জন্য। তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন, ৫২/৫৩ বছর আগের টাকার সাথে এখনকার টাকার মান আকাশ-পাতাল পার্থক্য। তাই গ্রামবাসীরা এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে চায় না।