কেরুজ চিনিকলের বয়লারের ত্রুটির ৫ দিন পার : কর্তৃপক্ষ নাজেহাল

দর্শনা অফিস: কেরুজ চিনিকলের ৪ নং বয়লার ত্রুটির ৫ দিন পেরিয়ে গেলো। প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়েও সমস্যা সমাধান হয়নি। জোরেসোরে চলছে মেরামত কাজ। দিনদিন চরম বিপর্যয়ের মুখে ধাবিত হচ্ছে আখমাড়াই কার্যক্রম। রাত-দিন ত্রুটি সারিয়ে তুলতে নাজেহাল হয়ে পড়েছে মিল কর্তৃপক্ষ। মাটিতে পড়ে শুকাচ্ছে আখ। এবারের মাড়াই মরসুমে বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ৭৬ বছর বয়সী কেরুজ চিনিকলের ২০১৩-১৪ আখমাড়াই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয় গত বছরের ৬ ডিসেম্বর। মাড়াই শুরু হওয়ার ৩২ দিনের মাথায় গত গত মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে মিলের ৪ নং বয়লারের ঝুলন্ত ছাদ ভেঙে পড়ে। এতে বন্ধ হয়ে যায় মাড়াই কার্যক্রম। বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রেহায় পেতে মিলের সবকটি বয়লারের আগুন নিভিয়ে দেয়া হয়েছে। সমস্যার পর থেকে ৩৪ ঘণ্টা বহুচেষ্টায় মেরামত সম্পন্ন করে গত বুধবার বিকেল ৪টার দিকে আখমাড়াই শুরু করা হলেও তা টেকেনি। মাত্র আধঘণ্টার মাথায় ফের আগের দশায় পরিণত হয়। এরপর পরিণত আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করে। সমস্যা সমাধানে হিমশিম খায় মিল কর্তৃপক্ষ। শুরু করে চেষ্টা তদবির। হয়নি কোনো সুরাহা। উপায়ন্তর না পেয়ে বুধবার রাতে বয়লারের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম তৈরি করতে দেয়া হয় রেইন উইকে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে রেইন উইক কর্তৃপক্ষ কেরুজ বয়লারের হেঙ্গারসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ সরবরাহ করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা পারেনি। গতকাল শুক্রবার রাত ৮টার দিকে রেইন উইক কর্তৃপক্ষ সরঞ্জাম সরবরাহ করে। সে থেকে শুরু হয় ঘষামাজা ও সেটিং ফিটিঙর কাজ। মিলের ওয়ার্কসপ বিভাগে মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবীদ আজিজুর রহমান, ৫টি বিভাগের মহাব্যবস্থাপকসহ সকল কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে গতকাল শুক্রবার রাত থেকেই একদল শ্রমিক নিরলসভাবে শুরু করেছে মেরামত কাজ। সফলতার আশায় শুরু করলেও কবে কখন নাগাদ কাজ সম্পন্ন হবে তা কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারেনি। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আগামী ২/১ দিনের মধ্যে সকল সমস্যার সমাধান কাটিয়ে আখমাড়াই কার্যক্রম শুরু করা হতে পারে। তবে ২/১ দিনের মধ্যে বয়লারের ত্রুটি সারিয়ে তুলতে ব্যর্থ হলে মিল আঙিনায় পড়ে থাকা হাজার হাজার মেট্রিক ট্রন আখ রোদে শুকিয়ে খড়িতে পরিণত হবে। এতে মিল কর্তৃপক্ষকে বড় ধরনের লোকসান গুনতে হতে পারে।

এলাকাবাসীর দাবি সরকারের এ বৃহত্তর শিল্পকে রক্ষা করতে আধুনিক প্রযুক্তিতে মিল পরিচালনা করা জরুরি। মিলের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবীদ আজিজুর রহমান বলেছেন, বয়লারের সমস্যা সমাধানে সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী, শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ সম্মিলিতভাবে আন্তরিক চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।