কুষ্টিয়া পৌরসভা নির্বাচন ঝুলে আছে ১১ বছর

স্টাফ রিপোর্টার: সীমানা ও ওয়ার্ড বিভক্তিকরণ জটিলতায় দীর্ঘ ১১ বছর যাবত কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাচন হচ্ছে না। ২০০৪ সালে সর্বশেষ এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। ইতোমধ্যে নির্বাচনের দুটি মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও পূর্বের মেয়র ও কাউন্সিলররাই এখনো প্রতিনিধি হিসাবে বহাল আছেন। উচ্চ আদালতে মামলা নিষ্পত্তি হলেও পৌরসভার সম্প্রসারিত এলাকার সীমানা নির্ধারণ ও ওয়ার্ড বিভক্তিকরণ জটিলতায় নির্বাচন বন্ধ আছে। এদিকে দীর্ঘকাল নির্বাচন না হওয়ায় একদিকে সম্প্রসারিত এলাকার মানুষের নাগরিক সুবিধা ও উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে পৌরবাসীর মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে হতাশা। এদিকে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার বর্তমান পরিষদের মেয়াদ অনেক আগেই পূর্ণ হয়েছে। মাঝে নির্বাচনী হাওয়া উঠলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হয়নি। কবে নাগাদ ঘোষিত হবে চুয়াডাঙ্গা পৌর নির্বাচনী তফশিল তা এখনও নিশ্চিত হয়নি।

জানা যায়, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার অন্তর্গত বারখাদা ইউনিয়নের সম্পূর্ণ এলাকা এবং মজমপুর ও জগতি ইউনিয়নের অংশবিশেষ পৌরসভার সম্প্রসারিত এলাকা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট প্রকাশ করা হয়। কিন্তু এরপর উচ্চ আদালতে দুটি মামলা হয়। পরবর্তীতে আদালতে মামলা দুটি নিষ্পত্তি হলেও সম্প্রসারিত এলাকার সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা ও নতুন ওয়ার্ড নির্ধারণ না হওয়ায় নির্বাচন নিয়ে সৃষ্টি হয় জটিলতা। হাইকোর্টে মামলা নিষ্পত্তির পরও সম্প্রসারিত এলাকার সীমানা নির্ধারণ, ওয়ার্ড বিভক্তিকরণ ও বর্ধিত এলাকার ভোটার অন্তর্ভুক্তি প্রক্রিয়া ঝুলে আছে দীর্ঘকাল।

এদিকে দু মেয়াদ অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচন ঝুলে থাকায় একদিকে জনগণের ভোট প্রয়োগের অধিকার খর্ব হচ্ছে। অন্যদিকে পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত হয়েও বর্ধিত এলাকার মানুষ উন্নয়ন ও নাগরিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়া পৌরসভার সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৪ সালে। সে সময় পৌরসভার ভোটার সংখ্যা ছিলো ৫৬ হাজার। বর্তমান বর্ধিত এলাকার প্রায় ৬৭ হাজার ভোটার পৌরসভায় অন্তর্ভুক্ত হবে বলে জানা যায়। এদিকে পৌরসভার বর্ধিত অংশের সীমানা নির্ধারণ ও ওয়ার্ড বিভক্তিকরণের জন্য ইতঃপূর্বে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দু দফায় লিখিত পত্র দেন কিন্তু তা সত্ত্বেও সীমানা নির্ধারণ ও ওয়ার্ড বিভক্তিকরণ কাজটি এখনো সম্পন্ন হয়নি। এ বিষয়ে পুনরায় গত ৮ এপ্রিল সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে আবারো তাগিদ দিয়ে আরো একটি লিখিত পত্র পাঠানো হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোদেজা বেগম জানান, একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণ ও ওয়ার্ড বিভক্তির কাজ শুরু করা হয়েছে। দ্রুত এ কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে তিনি জানান। পৌর মেয়র আনোয়ার আলী জানান, সম্প্রসারিত এলাকার সীমানা নির্ধারণ, ওয়ার্ড বিভক্তি না হওয়ায় পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠানে জটিলতা রয়েছে। তিনি অবিলম্বে এসব জটিলতা দূর করে কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন জানান, বর্ধিত এলাকার সীমানা নির্ধারণ ও ওয়ার্ড বিভক্তিকরণের কাজ চলছে। তবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে আইনি কোনো বাধা আছে কি-না সে বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে জানান।