কুষ্টিয়ায় গোরস্তানের ৯০ লাখ টাকা লুটপাটের পাঁয়তারা

 

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ৫টি গোরস্তানের মাটি ভরাটের (কাবিটা) ৮৯ লাখ ৩হাজার ২৯৯ টাকা লুটপাটের পাঁয়তারা করছে পিআইও আব্দুল কাউয়ুম ও পিআইসি কমিটির সদস্যরা মর্মে অভিযোগ উঠেছে। ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচির আওতায় অর্থের বিশেষ বরাদ্দের ৫টি গোরস্তানের কোনোটিতেই সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকার মাটি ভরাটের কোনো সুযোগ না থাকার ফলে সরকারি অর্থ লুটপাটের বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ মে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের উপ-পরিচালক (কাবিটা-১) উপ-সচিব সৈয়দা মেহেরুন নেছা কবীর স্বাক্ষরিত ৫১.০১.০০০০.১৬.০৭৭.১৬ (অংশ-১)-৪২২ নং স্মারকে মিরপুর পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের মিরপুর গোরস্তান, ৩ নং ওয়ার্ডের মোশারাফপুর গোরস্তান, ৭ নং ওয়ার্ডের নওপাড়া গোরস্তান ও ৯ নং ওয়ার্ডের খন্দকবাড়িয়া গোরস্তানের অনুকূলে মাটি ভারাটের জন্য প্রতিটি গোরস্তানে ৫০ মেট্রিক টন চালের মূল্যে ১৮ লাখ ৫৪ হাজার ৮৫৪ টাকা মোট ৭৪ লাখ ১৯ হাজার ৪১৬ টাকা বরাদ্দ পায়।

অন্যদিকে, একই স্বাক্ষরিত ৫১.০১.০০০০.০১১.১৬.০৭৭.১৬ (অংশ-১)-৪১০ স্মারকে উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের বলিদাপাড়া গোরস্তানে ৪০ মেট্রিক টন চালের মূল্যে ১৪ লাখ ৮৩ হাজার ৮৮৮ টাকা ২০ পয়সা বরাদ্দ পায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার একাধিক মুসল্লি জানিয়েছেন, ধর্মের প্রতি সবারই দুর্বলতা রয়েছে কিন্তু গোরস্তানের নামে বরাদ্দ এনে কতিপয় ব্যক্তির স্বার্থসিদ্ধির জন্য অর্থ লুটপাট মেনে নেয়া হবে না এবং এই দুর্নীতির সাথে যারাই জড়িত থাক তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা।

সরজমিন ও তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, মিরপুর উপজেলার পিআইও আব্দুল কাউয়ুম ও তার সহযোগী মিরপুর বাজারের জনতা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী হাফিজুল ইসলামের যোগসাজসে ভুয়া প্রকল্প বানিয়ে সরকারি অর্থ লুটপাট করে কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। এ ব্যাপারে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের উপ-পরিচালক (কাবিটা-১) উপ-সচিব সৈয়দা মেহেরুন নেছা কবীরের সাথে ল্যান্ডফোনে আলাপ করলে তিনি জানান, ভুয়া প্রকল্প তৈরি করে সরকারি অর্থ লুটপাট করলে প্রকল্পগুলো বাতিলের ব্যবস্থা করা হবে।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. জহির রায়হান জানান, ভুয়া প্রকল্পের বিষয়টি জানা নেই তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

অপরদিকে চলতি অর্থ বছরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছোট-বড় ৩৭টি ত্রাণের ব্রিজের টেন্ডার হয় এর অধিকাংশ ব্রিজের সংযোগ সড়ক নেই এবং জনগণেরও কোনো প্রয়োজন না থাকলে পিআইও আব্দুল কাউয়ুম শতকরা ১৫ ভাগ কমিশন পাওয়ার স্বার্থে ব্রিজগুলো নির্মাণ করান। তার (পিআইও আব্দুল কাউয়ুম) এসব দুর্নীতি নিয়ে ইতোমধ্যেই স্থানীয় ও জাতীয় কয়েকটি শীর্ষ দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এলাকার সচেতন মহলের দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও দুদক বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত করলে সমাজের মুখোশধারীদের চেহারা উন্মোচিত হবে এবং সরকারি টাকা লুটপাট বন্ধ হয়ে সরকারের ইতিবাচক উন্নয়নের কাজে লাগবে। এ বিষয়ে মিরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুমের মোবাইলে রিং দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।