কিশোরী কন্যার বিয়ে দেয়ার দায়ে বাবার কারাদণ্ড: জন্মসনদ জালকরাসহ বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে স্থানীয় এক সাংবাদিক পাকড়াও

 

স্টাফ রিপোর্টার: কিশোরী কন্যা জাহানারা খাতুনকে বিয়ের আসনে বসানোর অপরাধে পিতা চুয়াডাঙ্গা শৈলমারীর জাহিদুল ইসলামের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় তাকে ১৫ দিনের কারাদণ্ডাদেশ দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এছাড়া জন্মসনদ জাল করাসহ বাল্যবিয়েতে পুলিশি ঝামেলা এড়ানোর জন্য অর্থ হাতানো এক সাংবাদিককে পুলিশ আটক করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ তোফাজ্জেল হক বলেছেন, জাহাঙ্গীর নামের একজনকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে পাওয়া তথ্য প্রাথমিক যাচাই বাছাই চলছে। জন্মসনদ স্ক্যান করে জালকরাসহ অন্যান্য বিষয়ে প্রাপ্ত তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেলে জাহাঙ্গীর যে পরিচয়ই দিক তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপরদিকে সূত্র বলেছে, জাহাঙ্গীর স্থানীয় একটি পত্রিকার বেগমপুর প্রতিনিধি।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের বেগমপুর ইউনয়নের শৈলমারী গ্রামের পীর মোহাম্মদের ছেলে জাহিদুল ইসলামকে গতকাল শুক্রবার বিকেলে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার এসআই মাহবুব হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে তাকে আটক করেন। তিনি জানান, জাহিদুল ইসলাম তার ৫ম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে জাহানারা খাতুনকে বিয়ে দিচ্ছে। এ অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে আটক করে থানায় নেয়া হয়। পরে নেয়া হয় ভ্রাম্যমাণ আদালতে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কেএম মামুনুজ্জামান পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার ভূমি মারুফুল ইসলাম। সাক্ষ্য প্রমাণ পরীক্ষা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত জাহিদুল ইসলামকে বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন ১৯২৯’র ৫ ধারায় দোষী সাব্যস্থ করে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। এ রায়ের পর দণ্ডিত জাহিদুল ইসলামকে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে।

‌এদিকে বাল্যবিয়ে পড়ানোর জন্য নকল জন্মসনদ প্রণয়নসহ পুলিশ-প্রশাসনকে ম্যানেজ করার প্রতিশ্রুতিতে টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি মুখোরচক গল্পে রূপ নেয়। এরই ভিত্তিতে স্থানীয় সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলমকে পুলিশ আটক করেছে। থানা কাষ্টডিতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হলেও তাকে ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য রাজনৈতিক তদবরি অব্যাহত রয়েছে। গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত ছিলো।

উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের তিতুদহ ইউনিয়নের ছোটশলুয়া গ্রামের ওসমান আলীর ছেলে বর্তমানে দামুড়হুদার বাসিন্দা হাকিমের সাথে জাহানারার বিয়ের আয়োজন করা হয়। সূত্র বলেছে, গোপনে বিয়েও নাকি পড়িয়েছে কাজি। পুলিশ এ বিষয়েও তদন্ত শুরু করেছে।