কালীগঞ্জের আলোচিত বিএনপি নেতা ইসমাইল হত্যামামলা সিআইডিতে প্রেরণ

 

ঝিনাইদহ অফিস:ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র ইসমাইল হোসেন হত্যামামলাটি সিআইডিতে প্রেরণ করা হয়েছে। সম্প্রতি মামলাটির তদন্তভার ঝিনাইদহ সিআইডি ইন্সপেক্টর আবুল কাশেমের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টসূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর হওয়ায় অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার এসআই ইমরান আলম। তিনি জানান, ইতঃপূর্বে এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি শাহাজানকে যশোর থেকে আটক করা হয়েছে। অপর দু আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। এখন মামলাটি সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি শাহাজান আলী গ্রেফতার ও অপর দু আসামি আজিজার রহমান ও আব্বাস আলী আদালতে আত্মসমর্পণ করলেও হত্যার নেপথ্যের প্রধান নায়ক ও পরিকল্পনাকারীদের আটক করতে না পারার কারণে মামলাটি সিআইডির ওপর তদন্তভার ন্যাস্ত করা হয়েছে। হত্যার পরিকল্পনাকারীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানোর কারণে ইসমাইলের পরিবারের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এসব কারণে মামলাটি সিআইডির ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। মামলাটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত হলে ফেঁসে যেতে পারে হত্যার পরিকল্পনাকারী ও প্রধান নায়ক।

তবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার এসআই ইমরান আলম জানান, প্রতিবছর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলা পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স থেকে সিলেক্ট করে সিআইডিতে প্রেরণ করা হয়। এই মামলাটিও হয়তো ওই ক্যাটাগরিতে পড়ার কারণে সিআইডিতে পাঠানো হয়েছে।

ঝিনাইদহ সিআইডির ইন্সপেক্টর আবুল কাশেম মামলাটি সিআইডিতে ন্যাস্ত হওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, ৩/৪ দিন আগে ইসমাইল হোসেন হত্যামামলাটি আমার ওপর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো মামলার মূল নথি হাতে পায়নি।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গত ১৩ মে সকাল ৮টার দিকে কালীগঞ্জ শহরের চাপালী সড়কের একটি কালভার্টের কাছে সন্ত্রাসীরা বিএনপি নেতা ইসমাইল হোসেনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে খুন করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহত ইসমাইলের স্ত্রী জাহানারা বেগম বাদী হয়ে গত ১৪ মে চাপালী গ্রামের লুৎফর রহমানের ৩ ছেলে শাহাজান আলী, আজিজার রহমান, আতিয়ার রহমান ও একই গ্রামের মৃত আবু তালেবের ছেলে আব্বাস আলীসহ অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে আসামি করে কালীগঞ্জ থানায় একটি হত্যামামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডের ১৭ দিন পর গত ৩০ মে মামলার প্রধান আসামি শাহাজানকে যশোর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই রাতেই হত্যাকাজে ব্যবহৃত ধারালো রামদাটি উদ্ধার করে। পরদিন ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে শাহাজানকে সোপর্দ করা হয়। গত ৮ জুন আদালত শাহাজানকে ২ দিনের রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করেন।

এ মামলার অপর দু আসামি আজিজার রহমান ও আব্বাস আলী আদালতে আত্মসমর্পন করে। এজাহারভুক্ত অপর আসামি আতিয়ার রহমান এখনো পলাতক রয়েছে। আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর হওয়ায় হত্যার নেপথ্যকারীরা ও প্রধান নায়ক আটক হবে বলে সচেতনমহল মনে করছেন।