কার্পাসডাঙ্গার ভৈরব নদীর পাড় ও কৃষিজমির মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে ইটভাটায়

কুড়লগাছি প্রতিনিধি/ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি: কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি দিয়ে কার্পাসডাঙ্গা-নাটুদার ভাটাগুলোতে ইট প্রস্তুত করা হচ্ছে। ফসলের ক্ষতি করে জমি থেকে মাটি কেটে নেয়ায় কৃষক উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছে। ইটভাটা অনুমোদন দেয়ার সময় কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি (টপ সয়েল) ব্যবহার না করার নির্দেশ দেয়া হয় মালিকদের। নির্দেশনা অমান্য করে কার্পাসডাঙ্গার প্রায় ১০টি স্থান থেকে ভাটায় ব্যবহার করার জন্য কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি কাটা হচ্ছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, কার্পাসডাঙ্গায় ৫টি ইটভাটা রয়েছে। ভাটাগুলোতে বছরে ৭ মাস ইট প্রস্তুত করা হয়। প্রতিটি ইটভাটায় ৩০ লাখ থেকে ৪০ লাখ ইট প্রস্তুত করা হয়। এসব ইট প্রস্তুত করার জন্য কৃষিজমির উপরিভাগের এঁটেল মাটি ব্যবহার করা হয়। স্থানীয় মাটি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ভাটা মালিকরা এগুলো কিনে থাকেন। এক হাজার ৫০০ ফুটের এক গাড়ি মাটির মূল্য স্থান ভেদে এক হাজার ৫০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা। প্রতিটি ইটভাটায় বছরে ৩ থেকে ৪ লাখ গাড়ি মাটি ব্যবহার করা হয়। মাটি ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কার্পাসডাঙ্গার প্রায় ১০টি স্থান থেকে ইটভাটার জন্য মাটি কাটা হচ্ছে। কৃষিজমি, সড়কের পাশ থেকে এবং দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের বাঘাডাঙ্গার ভৈরব নদীর পাড় থেকে এ মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করা হয়। মাটি কাটার ফলে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে এবং নদীর পাড় কাটার কারণে পাড়ের ওপরের বসতবাড়ি নদী ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে। বাড়ির মালিকরা ভৈরব নদীর পাড় কাটতে বাধা দিতে গেলে প্রভাবশালী প্রকাশ মণ্ডল ও প্রদ্যুত মণ্ডল বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। জমি গভীর করার কারণে পাশের জমি ধসে পড়ে যাওয়ায় কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
অপরদিকে কার্পাসডাঙ্গা কুতুবপুর প্রধান সড়কের পাশে মংলা মণ্ডল তার ফসলি জমিতে মাটি কেটে পুকুর তৈরীর করার কারণে পার্শ্ববর্তী জমিগুলোর ফসল ও বাগানগুলো প্রতিবছর বর্ষার সময় পাড় ধসে ফসলিজমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কার্পাসডাঙ্গার কুতুবপুর গ্রামের কৃষক লাল্টু মিয়া বলেন, ‘জমি গভীর করে মাটি কাটার ফলে পাশের কৃষিজমি ভাঙছে। আমরা বাধা দিলেও মাটি ব্যবসায়ীরা তা মানে না। এভাবে মাটি কাটা হলে ফসলের ও পাশের বাগানের গাছগুলো একটি একটি করে পাড় ধসে ভাঙনে পড়ে যাচ্ছ। ইটভাটায় মাটির ব্যবহার হবে এটাই স্বাভাবিক। ভাটা স্থাপনের অনুমতি দেয়ার সময় তাদের বলে দেয়া হয় যাতে কৃষিজমির টপ সয়েল ব্যবহার করা না হয়। এরপরও প্রতিনিয়ত কৃষিজমির টপ সয়েল কাটা হচ্ছে। মাটি বিক্রি না করার জন্য আমরা নিয়মিত কৃষকদের সচেতন করছি। দামুড়হুদা উপজেলা ভূমি কমিশনার আ. হালিম বলেন, ‘ইটভাটার জন্য কৃষিজমির মাটি কেটে নেয়ার বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।