কাঁদছে ব্রাজিল : হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন নেইমার

 

মাথাভাঙ্গা মনিটর: বিশ্বকাপথেকে হয়তো ছিটকে গিয়েছেন। কিন্তু ব্রাজিলীয় সমর্থকদের জন্য সুখবর।হাসপাতালে বেশিদিন থাকতে হলো না দলের তারকা নেইমারকে। পিঠের হাড় ভেঙে গেলেওশনিবারই হাসপাতাল থেকে নেইমারকে ছেড়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। গতকাল শুক্রবারকোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে কলম্বিয়া ডিফেন্ডার জুনিগা নেইমারকে পিছন থেকেট্যাকল করতে গেলে পিঠে বড়সড় আঘাত পান বার্সেলোনা তারকা। মাঠেই লুটিয়েপড়েন ব্রাজিলের ‘ওয়ান্ডার কিড’। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরাপরীক্ষা করে দেখেন নেইমারের পিঠের হাড় ভেঙেছে। সাথে সাথেই ব্রাজিলদলের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে জানিয়ে দেয়া হয় যে চলতি বিশ্বকাপে আর কোনোওম্যাচই খেলা হবে না নেইমারের। কিন্তু বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেলেও আপাতত দলেরসাথেই থাকছেন তিনি।গতকাল শনিবার তাই হাসপাতাল থেকে ব্রাজিল বেসক্যাম্পেইফিরছেন নেইমার।

মাঝ মাঠে নেইমারের কাছে থেকে বল দখল নিতে লাফিয়ে উঠেছিলেন হুয়ান ক্যামিলোজুনিগা। কলম্বিয়ার এ ডিফেন্ডারের হাঁটুর আঘাতে ৮৮ মিনিটে স্ট্রেচারে মাঠছাড়তে হয় নেইমারকে। সেখান থেকে সোজা ফোর্তালেজা হাসপাতালে। ব্রাজিলিয়ানফরোয়ার্ডের বিশ্বকাপ মিশন আকস্মিকভাবেই শেষ! যাঁকে ঘিরে ব্রাজিলের ষষ্ঠবিশ্বকাপ শিরোপার স্বপ্ন, যাঁকে কেন্দ্র করে কোচ লুইস ফেলিপে স্কলারিররণকৌশল, সেই নেইমার এভাবে ছিটকে পড়বেন, মানতেই পারছেন না ব্রাজিলিয়ানরা। একযুগ পর বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার আনন্দের পরিবর্তে গোটা ব্রাজিলে এখনশোকের মাতম। একই সাথে ক্ষোভে-রাগে ফুঁসছেন ব্রাজিলের সমর্থকেরা।ব্রাজিলের অধিকাংশ সংবাদমাধ্যমের অভিন্ন শিরোনাম‘নেইমারের বিশ্বকাপ শেষ’ দেশটির অন্যতম শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা ‘ও গ্লোবো’র অনলাইন সংস্করণের শিরোনামমেরুদণ্ডের অস্থিসন্ধি ভেঙে নেইমারের বিশ্বকাপ শেষ। সাও পাওলো থেকেপ্রকাশিত ‘এস্তাদাও’র শিরোনামও প্রায় একই।১৯ বছর বয়সী শিক্ষার্থীফাবিয়ান রুইজ দুঃখ ভারাক্রান্ত নেইমারের এ অবস্থায়, ‘এটা ভয়ঙ্কর খবর।সবচেয়ে বাজে খবর। নেইমার আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সামনের ম্যাচেদলের অন্য খেলোয়াড়দের অনেক লড়াই করতে হবে। জার্মানির বিপক্ষে জেতা খুব কঠিনহয়ে যাবে।ম্যাচের পর নেইমারকে ফোর্তালেজার যে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে তারপাশে জনতার ভিড় জমে যায়। সবাই স্লোগান তোলেন‘ফোর্সা নেইমার’ বা ‘শক্ত হওনেইমার।’ এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও উঠেছে ঝড়। অনেক ব্রাজিলিয়ানজুনিগার শাস্তি দাবি করেছেন ফিফার কাছে। তাদের দাবি,উরুগুয়ের লুইসসুয়ারেজকে যেভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছে,একইভাবে জুনিগাকেও শাস্তি দেয়া হোক।এক ব্রাজিলিয়ান প্রাবন্ধিক জুনিগার ফাউলকে ‘হিংস্র আক্রমণ’ হিসেবে অভিহিতকরেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফাব্রিসিও তাভারেজ তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘নেইমারের বিশ্বকাপ শেষ। কারণ সে কলম্বিয়ান খেলোয়াড়ের কাপুরুষোচিত ফাউলেরশিকার।

সাও পাওলোর একটি পানশালায় বসে খেলা দেখছিলেন ২৭ বছর বয়সী মনিকা ফেরেইরা। একযুগ পর বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার আনন্দে উদ্বেলিত ছিলেন তিনি। কিন্তুযখন শুনলেন নেইমারের বিশ্বকাপ শেষসেই আনন্দ পরিণত হলো বিষাদে। তিনিজানালেন, ‘ও আমাদের সেরা খেলোয়াড়। তাকে আমরা ভালোবাসি কারণ, সে ব্রাজিলেরজার্সিতে কঠোর পরিশ্রম করে।কোনো কোনো ব্রাজিলিয়ান তো বিশ্বকাপ শিরোপারআশাই ছেড়ে দিয়েছেন। ৩৩ বছর বয়সী এদোয়ার্দো গোমেজ ম্যাচের পর বিষণ্ণ মনেবান্ধবীকে নিয়ে বসেছিলেন। ম্লান বদনে বললেন, সে আমাদের সেরা খেলোয়াড়। মনেহয় না নেইমারকে ছাড়া বিশ্বকাপ জিততে পারবো।