ওমানে দালালচক্রের কাছে জিম্মি : ফেরত আনতে দেড় লাখ টাকা দাবি

চুয়াডাঙ্গার গিরশনগরের রোকেয়া নারী পাচারকার চক্রের খপ্পরে

 

বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার গিরিশনগর গ্রামের তিন সন্তানের জননী রোকেয়া বেগম নারীপাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ৬ মাস পর গিয়ে পৌঁছেছেন ওমানে। সেখানে পুনরায় পাচারকারীদের হাতে পড়ে খেয়ে না খেয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মধ্যদিয়ে মানবতের জীবন কাটাচ্ছেন। রোকেয়াকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে আবারও পাচারকারী চক্র দেড় লাখ টাকার দাবিতে বিভিন্ন মোবাইলফোনে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। তাকে ফেরত আনতে পাচারকারীচক্রের সদস্য নুরুল্লাপুর গ্রামের হাবিলের নিকট রোকেয়ার পরিবারের লোকজন ধরনা দিচ্ছে।

অভিযোগে জানা গেছে, গত বছরের ২ জুন ভালো চাকরি ও মোটা অঙ্কের বেতনের প্রলোভনে পড়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের গিরীশনগর মাঝেরপাড়ার আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী তিন সন্তানের জননী রোকেয়া বেগম নারীপাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়েন। এ চক্রের সদস্য নুরুল্লাপুর গ্রামের ছালামতের ছেলে হাফিজ উদ্দিন ওরফে হাবি তার জামাই বশিরের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে ওমানে নেয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে নিয়ে যায় রোকেয়াকে। যাওয়ার পরের দিন রোকেয়া পাচারকারীচক্রের সদস্যদের চাপে বাড়িতে মোবাইলফোনে জানান ওমানের উদ্দেশে প্লেনে উঠছে, কিছুক্ষণের মধ্যে মোবাইলফোন বন্ধ হয়ে যাবে। সেই যে কথা আর কোনো যোগাযোগ নেই তার বাড়ির লোকজনের সাথে।

রোকেয়ার ছেলে ফারুক হোসেন জানান, গত ৪/৫ দিন আগে মা মোবাইলফোনে আমার কাছে জানায় বাড়ি থেকে যাওয়ার ৬ মাসের মাথায় গত ১৫ নভেম্বর ওমানে পৌঁছেছে। এতোদিন দালালরা ঢাকায় আটকে রেখেছিলো। কারো সাথে যোগাযোগ পর্যন্ত করতে দেয়নি। ওমানে কোনো কাজ না পেয়ে কাজের সন্ধানে ঘুরাঘুরি করতে গিয়ে পুনরায় শ্রীলঙ্কার দালালদের হাতে পড়ে গেছি। তোরা বশিরের শ্বশুর হাবিলের সাথে যোগাযোগ করে আমাকে বাড়িতে ফেরত নেয়ার ব্যবস্থা কর। সেখানে থেকে ফোন করা হচ্ছে রোকেয়াকে ফেরত পেতে হলে পুনরায় দেড় লাখ টাকা লাগবে। তা না হলে তাকে মেরে ফেলা হবে। মোবাইলফোনে এ কথা শোনার পর আমি বশিরের শ্বশুর হাবিলের নিকট গিয়ে আকুতি-মিনতি করি মাকে ফেরত পাওয়ার জন্য। তিনি বলেন, আমার জামাইকে বলে দিচ্ছি। তারপর থেকে হাবিল তার সাঙ্গপাঙ্গ দিয়ে হুমকিধামকি দিচ্ছেন। এ বিষয়ে হাবিলের নিকট জানতে চাইলে তিনি রোকেয়াকে বিদেশে নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। বশির সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার জামাই ঢাকায় থাকে। বিষয়টি প্রশাসনকে খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছে সচেতন এলাকাবাসীসহ রোকেয়ার পরিবার।