এসইডিএফ বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল অ্যান্ড কোচিং : কার্যক্রম নিয়ে সন্দেহ ঘনীভূত

স্টাফ রিপোর্টার: প্রথমে বলা হলো, শিশুদের বিদ্যালয়ের মতোই পাঠদান করা হবে, পরে বলা হলো- ওরা প্রাথমিক বিদ্যালয়েই পড়বে। তবে তাদের ইংরেজিতে দক্ষ করতে প্রাইভেট টিউশনি দেয়া হবে। কে দেবে? শিক্ষক। শিক্ষক কোথায়? সন্তুষ্টুজনক জবাব মেলেনি। ফলে বহিরাগত দুজনের হঠাত খুলে বসা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল অ্যান্ড কোচিং নিয়ে সন্দেহে ঘনীভূত হয়েছে। এলাকার ১০টি গ্রামের কমলমতি শিশুদের অভিভাবকদের নিকট থেকে জনপ্রতি ১শ টাকা করে আদায় করে বহিরাগতদের হাতে তুলে দিয়ে কয়েকজন মাঠকর্মী এখন দুশ্চিন্তার প্রহর গুণছে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের বেলগাছি-ফার্মপাড়া সড়কের ধারের ফার্মপাড়ার এক প্রান্তে বাসা ভাড়া নিয়ে দু ব্যক্তি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে চাকরি প্রত্যাশী যুবক-যুবতী খুঁজতে শুরু করেন। এসইডিএফ বাংলাদেশ, চুয়াডাঙ্গা জোনাল অফিস হিসেবে খোলা কার্যালয়ে ওরা দুজনই। এরা নিজেদের পরিচয় দিতে গিয়ে জানিয়েছেন, দুজনেরই বাড়ি টাঙ্গাইলের শখিপুরে। এদের এজনের নাম আলমগীর, অপরজন দেলোয়ার হোসেন বলে পরিচয় দেন। প্রথমে এদের নিকট ভোটার আইডি কার্ড দেখতে চাওয়া হলে তারা তা বাড়ি সখিপুরে রেখে এসেছে বলে জানান। এ তথ্য দিয়ে স্থানীয়রা বলেছেন, মাস খানেক আগে দুজন রাস্তার পাশের বাড়ি ভাড়ায় নিয়ে সাইনবোর্ড লাগিয়ে এলাকায় যুবক-যুবতীকে নিয়োগ দেয়া হবে বলে প্রচার করে। নিয়োগপ্রত্যাশীরা দুজনের নিকট গেলে, তারা বলেন- প্রতিটি গ্রামে কমপক্ষে ৬০ জন শিশু সংগ্রহ করতে হবে। শিশু প্রতি ১শ টাকা করে নিতে হবে। বিনিময়ে তাদের বিদ্যালয়ের মতো করে শিক্ষাদানসহ বইপুস্তক দেয়া হবে। সপ্তায় কিছু অর্থ দিয়েও সহযোগিতা করা হবে। শিক্ষার্থী সংগ্রহকারীদের উপযুক্ত বেতন দেয়া হবে। নিয়োগ করা হবে শিক্ষকও। এসব কথা শুনে কয়েকজন যুবক-যুবতী কাজে যোগ দেয়। এরা চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের দিননাথপুর, আকন্দবাড়িয়া, হানুরবাড়াদি, ফুলবাড়িয়া, ভাণ্ডারদহে, গাড়াবাড়িয়া, কাথুলী, হিজলগাড়ি, বলদিয়া ও ছয়ঘরিয়ার শিশু ছেলে-মেয়েদের পিতা-মাতার নিকট থেকে ১শ টাকা করে নিয়ে অলমগীর ও দেলোয়ার হোসেনের নিকট তুলে দেয়। প্রথমে এরা জানিয়েছিলো বই পুস্তক দেয়া হবে। গতকাল কয়েকটি বাজার থেকে কেনা ইংরেজি শিক্ষা বই মাঠ কর্মীদের হাতে তুলে দিতেই সন্দেহ দানা বাধে।

গতকাল বিকেলে আলমগীর হোসেন ও দেলোয়ার হোসেনের কার্যালয়ে এ প্রতিবেদক উপস্থিত হয়ে তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে দুজনই অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন। তারা বলেন, জেলায় কাজ করার জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন নেয়া হয়নি। স্কুল অ্যান্ড কোচিং আবার কেমন প্রতিষ্ঠান? কর্মকাণ্ড কী? আমতা আমতা করে একজন জবাব দেন, গ্রামে গ্রামে ইংরেজি শিক্ষাণের জন্য শিশুদের কোচিং। তাহলে স্কুল লেখা হলো কেন? জবাব মেলেনি। প্রতিবেদক ওই কার্যালয় থেকে প্রস্থান করতেই তিন কর্মীকে ছুটির কথা জানিয়ে বলেন ৫দিন ছুটি। নতুন বছরের ১ তারিখ থেকে আবার কর্মকাণ্ড শুরু হবে।