এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা উত্তেজনা : রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা

দামুড়হুদার হাতিভাঙ্গায় মাদরাসার ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে না যাওয়ায় লোকজনকে মারধরের হুমকি

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার হাতিভাঙ্গা গ্রামবাসীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে ব্যক্তি নামে মাদরাসা প্রতিষ্ঠার পর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন অধিকাংশ গ্রামবাসী উপস্থিত না হওয়ায় তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেছে ব্যক্তি নামে মাদরাসা প্রতিষ্ঠার পক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় নিরীহ গ্রামবাসীকে মারধরের হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছে প্রভাবশালী ওই মহল। জোরপূর্বক বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে আজাদ আলীর বাড়ির রাস্তা। নিরুপায় হয়ে ওই প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী আজাদ আলী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ নিয়ে গ্রামে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী। ভুক্তভোগী হাতিভাঙ্গা গ্রামের আজাদ আলী জানান, বিগত ৬-৭ মাস আগে হাতিভাঙ্গা গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে শরীফ তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে নিজ গ্রামে শরীফ উদ্দীন আদর্শ মাদরাসা নামকরণ করে একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। মাস দুয়েক আগে ওই মাদরাসায় ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ওয়াজ মাহফিলে বেশকিছু টাকা-পয়সাও কালেকশন হয়। কিন্তু শরীফ ওই টাকা-পয়সার কোনো হিসাব কাউকে না দিয়ে নিজের ইচ্ছে মাফিক খরচ করে চলেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২২ মার্চ ওই মাদরাসার ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনের আয়োজন করে শরীফ উদ্দীন। প্রায় এক হাজার লোকের দাওয়াত দেয়া হয়। কিন্তু ওই দাওয়াতে সাড়া দেয়নি অধিকাংশ গ্রামবাসী। ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে শরীফ ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। ওইদিনের পর থেকে গ্রামের নিরীহ লোকজনকে মারধরসহ নানাভাবে হুমকি-ধামকির একপর্যায়ে গতকাল শনিবার আজাদ আলীর বাড়ির রাস্তা জোরপূর্বক বেড়া দিয়ে ঘিরে নেয় শরীফ তার সাঙ্গপাঙ্গরা। অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন আজাদ আলী। এ ঘটনায় তিনি গতকালই দামুড়হুদা মডেল থানায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি আরও বলেন, শরীফ নিজেই সভাপতি এবং নিজেই ক্যাশিয়ার। নিজের নামে মাদরাসা করে নিজেই সভাপতি হয়ে টাকা পয়সা লুটপাটের ধান্দা-ফিকির শুরু করেছে। গ্রামের লোকজন মেনে না নেয়ায় নিরীহ লোকজনকে মারধরের হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে।
ইউপি সদস্য ইব্রাহিম হোসেন জানান, গ্রামের ৯০ ভাগ লোক একদিকে আর শরীফের পক্ষে হাতেগোনা মাত্র কয়েকজন। গ্রামবাসীর দাবী মাদরাসাটির নাম পরিবর্তন করে হাতিভাঙ্গা কওমি মাদরাসা নামকরণ করা হোক এবং কওমি মাদরাসার নামেই জমি রেজিস্ট্রি করে দিতে হবে। তবেই গ্রামের সকলেই সহযোগিতা করবে। এছাড়া মাস দুয়েক আগে ওই মাদরাসায় ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ওয়াজ মাহফিলে মোটাঅঙ্কের টাকা কালেকশন হলেও তার কোনো হিসাব দেয়নি শরীফ। ফলে ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে অধিকাংশ গ্রামবাসী হাজির হয়নি। গ্রামবাসী উপস্থিত না হওয়ায় শরীফ ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা গ্রামের নিরীহ লোকজনকে মারধরের হুমকি-ধামকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরণের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।