একের পর এক রোগ : চিকিৎসায় ছিলো না কমতি : শেষ পর্যন্ত অকালেই ঝরে গেলেন রূপালী

কামরুজ্জামান বেল্টু: রূপালী খাতুনকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টায় কমতি করেননি স্বামী আরমানসহ নিকটাত্মীয় স্বজন। একে একে প্রকট সমস্যাগুলো কাটিয়ে সুস্থতার দিকেই যাচ্ছিলো রূপালীর শারীরিক অবস্থা। শেষ রক্ষা হলো না। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেলেন।

স্ত্রীর মৃত্যুতে শিশুসন্তান কোলে নিয়ে স্বামীর বুকফাটা কান্না দেখে অনেকেই ধরে রাখতে পারেননি অশ্রু। হাসপাতালের অধিকাংশেরই মুখে ছিলো অভিন্ন প্রশ্ন। এমন কী হয়েছিলো যে রূপালীকে অকালেই ঝরে যেতে হলো? চিকিৎসক বলেছেন, অসংখ্য রোগ বাসা বেধেছিলো রূপালীর শরীরে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার বিষ্ণপুর গ্রামের আরমান হোসেনের সাথে একই গ্রামের আব্দুল গফুরের মেয়ে রূপালী খাতুনের আনুমানিক ৭ বছর আগে বিয়ে হয়। আরমান তার স্ত্রী নিয়ে ঢাকা গাজীপুরে পাড়ি জমান। সেখানেই দোকান দিয়ে সুখের সংসার গড়ে তোলেন। সংসারে আসে ছেলে তুহিন। তার বয়স এখন ৪ বছর। ১১ মাস আগে অন্তঃস্বত্ত্বা হন রূপালী। ৭ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা অবস্থায় ধরা পড়ে জন্ডিসসহ বেশ কয়েকটি রোগ। অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে অনাগত সন্তান ও রূপালীর জীবন। রূপালীকে নেয়া হয় দামুড়হুদার বিষ্ণপুরে। এ চিকিৎসক থেকে ও চিকিৎসকের নিকট নিয়ে সুস্থ করে তোলার প্রাণান্ত চেষ্টা চলে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে রূপালী সন্তান প্রসব করে। প্রসূতি ও নবজাতকের শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে যাচ্ছে দেখে তাদেরকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। মারা যায় নবজাতক। প্রসূতি বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিলেন রূপালী। পরবর্তীতে তাকে নেয়া হয় মেডিসিন ওয়ার্ডে। গতকাল রূপালী মারা গেলে লাশ নেয়া হয় বিষ্ণপুর গ্রামে।

রূপালী খাতুনের মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মেডিসিন কনসালটেন্ট হৃদরোগ বিষেজ্ঞ ডা. পরিতোষ কুমার ঘোষ বলেন, রূপালী খাতুনের জন্ডিসের মাত্রা শুধু শেষ পর্যায়েই পৌঁচেছিলো না, ডায়রিয়াসহ অনেক রোগই বাসা বেধে ছিলো। চিকিৎসায় আমরা কমতি করিনি। তবুও শেষ পার্যন্ত তাকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব হলো না।